স্থানীয় প্রশাসন নির্বিকার বাউফলে লকডাউন ভেঙ্গে বাজারমুখী হাজারো মানুষ

প্রথম পাতা » পটুয়াখালী » স্থানীয় প্রশাসন নির্বিকার বাউফলে লকডাউন ভেঙ্গে বাজারমুখী হাজারো মানুষ
সোমবার ● ২০ এপ্রিল ২০২০


---

অতুল পাল, বাউফল সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসন কর্তৃক গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে জেলাকে লকডাউন ঘোষণার পরদিনই বাউফলে বিধিবিধান অমান্য করে হাজারো মানুষকে বাজারমূখী হতে দেখা গেছে। ১৯ এপ্রিল রোববার বিকেলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে প্রকাশিত ওই গণ বিজ্ঞপ্তিতে ওই দিনই সন্ধা ছয়টা হতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত পটুয়াখালী জেলাকে লকডাউন (অবরুদ্ধ) ঘোষণা করা হয়। কিন্তু বাউফলে লকডাউনের কোন কার্যকারিতা চোখে পড়ছে না। সাধারণ মানুষকে বুঝিয়ে ঘরবন্ধীসহ লকডাউন বাস্তবায়নের জন্য উপজেলা প্রশাসন কিংবা পুলিশ কার্যতঃ কোন ভূমিকাই রাখছেন না। ফলে করোনায় সংক্রামণের বিস্তার নিয়ে মানুষের মধ্যে অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সোমবার সরেজমিন বাউফলের কালাইয়া বন্দর ঘুরে দেখা গেছে, বাজারখোলা, বাজার রোড এবং সদর রোডে শত শত মানুষ বাজার করার জন্য ভিড় করে আছে। নেই কোন শারীরিক দূরত্বের বালাই। চায়ের দোকান, রেষ্টুরেন্ট, হোটেল, কসমেটিক্সের দোকানসহ বহু দোকান খোলা রয়েছে। যেগুলো করোনা নিয়ন্ত্রণ বিধান অনুযায়ি খোলা রাখার নিয়ম নেই। এগুলো নিয়ন্ত্রণে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রশাসন কিংবা পুলিশের কোন তৎপরতা চোখে পড়েনি। অপরদিকে অনেক কর্মহীন মানুষকে রাজনৈতিক নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের বাড়ির সামনে ত্রাণ পাওয়ার আসায় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। এদিকে প্রতিদিনই ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শত শত মানুষ পালিয়ে বাউফলসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকছে। সেই মানুষগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করারও কোন উদ্যোগ নেই। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তৎপরতায় গুটি কয়েক বহিরাগতদের ঘরের বাহিরে তাবু টানিয়ে কিংবা কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোয়ারেন্টামে রাখা হয়েছে। কিন্তু সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নেই কোন পর্যবেক্ষণ। প্রশাসনের নিরব ভূমিকা ও পুলিশের নিয়ম রক্ষার তৎপরতা এবং স্বাস্থ্য বিভাগের সক্রিয় ভূমিকা না থাকার কারণে এরকম শত শত মানুষের বাজারমূখী হতে দেখে করোনা নিয়ে মানুষের মধ্যে অজানা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
---

এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. পিকে সাহা সাগরকন্যাকে জানান, লকডাউন বাস্তবায়নে জনসচেতনা বৃদ্ধির জন্য মাইকিংসহ অন্যান্য প্রচারনার দায়িত্ব আমাদের নয়। এটা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং উপজেলা প্রশাসনের কাজ। আজ ঢাকা থেকে কালাইয়া ইউনিয়নে আসা ছয়জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে (কালাইয়া ইদ্রিছ মোল্লা ডিগ্রি কলেজ) রাখা হয়েছে। কয়েকদিন আগে আসা আরো দুইজনকে তাদের বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় তাবু টানিয়ে রাখা হয়েছে।  আমরা যে খবর পাই সেগুলো দেখার চেষ্টা করি। তিনি জানান, এপর্যন্ত ৩১ জনের নমূনা পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যে ১৩ জনের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। তারা সকলেই নেগেটিভ।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, পুলিশ বিভিন্ন হাট বাজারে টহল দিয়ে মানুষকে ঘরবন্ধী করার চেষ্টা করছে। এতৎপরতা অব্যহত থাকবে। লকডাউন কার্যকর করার বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ফোন দিলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. আনিচুর রহমান বালি বলেন, আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এ পর্যন্ত অন্ততঃ পঞ্চাশ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের বড় বাজার কালাইয়া বাজারকে নিয়ন্ত্রণের জন্য জনপ্রতিনিধি এবং ইজারাদারের সাথে কথা হয়েছে।

এপি/এনবি

বাংলাদেশ সময়: ২০:০০:০৮ ● ৪৬৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ