আমতলী সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বরগুনার আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের কালীবাড়ী গ্রামের জাকির হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। রবিবার করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। এতে এলাকায় মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
জানা গেছে, উপজেলার চাওড়া ইউনিয়নের কালিবাড়ী গ্রামের সেকান মৃধার ছেলে জাকির হোসেন মৃধা গত ১০ বছর ধরে নারায়ণগঞ্জ থেকে কাপড়ের ব্যবসা করে আসছে। নারায়নগঞ্জে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় জাকির ও তার পরিবারের লোকজন ওইখান থেকে গত রবিবার (১২ এপ্রিল) পালিয়ে গ্রামের বাড়ী আমতলী আসেন। করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে তিনি বাড়ীতেই লুকিয়ে ছিল। তার শরীরের অবস্থা বেগতিক দেখে পরিবারের লোকজন গত বুধবার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা তার নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকা রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইসিডিআর) পাঠিয়ে দেয়। শনিবার রাত ১০ টার দিকে তার নমুনা প্রতিবেদন আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসে। রবিবার সকালে এ খবর এলাকায় পৌছলে মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে জাকির বাড়ীতে অবস্থান করছেন। খবর পেয়ে ইউএনও মনিরা পারভীন রবিবার তার বাড়ী লকডাউন করে দিয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, জাকির গত রবিবার (১২ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রামের বাড়ী আমতলীতে আসেন। বাড়ীতে এসে তিনি লুকিয়ে ছিল। তিনি করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ায় এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতিবেশী বলেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় আমরা খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি। তিনি আরো বলেন, জাকির করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়েই নারায়ণগঞ্জ থেকে এসেছে।
স্থানীয় মেহেদী জামান রাকিব বলেন, জাকির নারায়ণগঞ্জ থেকে দীর্ঘদিন ব্যবসা করে আসছে। গত ১২ এপ্রিল জাকির পরিবারসহ বাড়ীতে এসে লুকিয়ে ছিল। এখন শুনছি সে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। দ্রুত করোনা আক্রান্ত জাকিরের সুচিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবী জানাই।
আমতলী উপজেলা আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, ওই রোগীর পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে, তিনি হোম আইসোলেশনে আছেন এবং তাকে বাড়ীতেই চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, গত বুধবার হাসপাতালের বর্হিবিভাগে চিকিৎসা নিয়ে এসেছিল জাকির। ওইদিন তার নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়। শনিবার রাত ১০ টার দিকে তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রতিবেদন পেয়েছি।
আমতলী থানার ওসি মোঃ শাহ আলম হাওলাদার বলেন, ওই রোগীর হোম আইসোলেশন নিশ্চিত করা হয়েছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন বলেন, ওই রোগীর বাড়ী লকডাউন করা হয়েছে। তাকে বাড়ীতে চিকিৎসাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য গত ৯ এপিল আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব জিএম দেলওয়ার হোসেন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরন করেন। ওই সময় থেকে বরগুনা জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাইন বিল্লাহ আমতলী উপজেলাকে লকডাউন ঘোষনা করেন। বর্তমান আমতলী উপজেলা লকডাউন অবস্থায় রয়েছে। এনিয়ে আমতলীতে দু’জন প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের রোগী আক্রান্ত হয়েছেন।