তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে পৃথক দুটি সংঘর্ষে নিহত ২

প্রথম পাতা » ঢাকা » তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে পৃথক দুটি সংঘর্ষে নিহত ২
সোমবার ● ১৩ এপ্রিল ২০২০


---

গোপালগঞ্জ সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
গোপালগঞ্জে পৃথক দু’টি সংঘর্ষে দুই জন নিহত ও অন্ততঃ ৮ জন আহত হয়েছে। সোমবার বেলা ১১টার দিকে সদর উপজেলার বনগ্রাম ও মুকসুদপুর উপজেলার বাহাড়া পশ্চিমপাড়া গ্রামে এসব ঘটনা ঘটে।
জুয়া খেলায় বাঁধা দেওয়ায় গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বনগ্রাম পশ্চিমপাড়া এবং পূর্বপাড়া ও মধ্যপাড়ার মধ্যে সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আজর ফকির (৫৫) নামে এক সিঙ্গাড়ার দোকানদার নিহত হন। এসময় পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৫ জনআহত হয়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বনগ্রাম মধ্যপাড়া হাফিজ সিকদারের লীজের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে করপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব মোল্লার নেতৃত্বে একটি বড় জুয়ার আসর চলে আসছিল। ওই জুয়ার আসরে জেলার বাইরে থেকেও জুয়াড়িরা জুয়া খেলার জন্য আসে। রোববার বিকেলে বনগ্রাম পশ্চিমপাড়ার যুবকরা একত্রিত হয়ে জুয়ার আসর বন্ধ করার জন্য ওই লীজে গেলে জুয়াড়িরা পালিয়ে যায়।
সোমবার বেলা ১০টার দিকে এঘটনার প্রতিশোধ নিতে বনগ্রাম পূর্বপাড়া ও মধ্যপাড়ার লোকজন একত্রিত হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মোল্লাডাঙ্গা বিলের ধান ক্ষেতের মধ্যে মহড়া দিতে থাকে। বিষয়টি বনগ্রাম পশ্চিমপাড়ার লোকজনের নজরে এলে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তারাও প্রতিপক্ষকে হটাতে ওই বিলের মধ্যে সমবেত হয়। এক পর্যায় দুই পড়ার লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এ খবর পেয়ে বৌলতলী তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য বেশ কয়েক রাউন্ড রবার বুলেট নিক্ষেপ করে। সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে করপাড়া বাজারের সিঙ্গাড়া ব্যবসায়ি আজর ফকির ঘটনাস্থলে নিহত হন। নিহত আজর ফকির বনগ্রাম পশ্চিমপাড়ার  মৃত. হামেদ ফকিরের ছেলে।
আহতদের গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সোমবার বেলা ১টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন বলেন, একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ ঠেকাতে গিয়ে কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড রবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে, মসজিদে নামাজ পড়াকে কেন্দ্র করে  জেলার মুকসুদদপুরে বিবাদমান দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে সুজন শেখ (২৬) নামে এক যুবক নিহত ও আহত হয়েছেন অন্ততঃ ৩ জন। এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, এলাকার অধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বাহাড়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের মজিবর শেখের সাথে ওই গ্রামের মতি মাতুব্বর ও ইব্রাহীম মাতুব্বরের দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।
রোববার মসজিদে এশার নামাজ পড়া নিয়ে মজিবর শেখের সাথে মতি মাতুব্বর ও ইব্রাহীম মাতুব্বরের কথা কাটাকাটি হয়। সোমবার ফজরের নামাজ পড়ার সময় মসজিদের মধ্যে ওই দুই পক্ষ আবারও তর্কবিতর্কে লিপ্ত হয়। এঘটনার জের ধরে দু’পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এসময় প্রতিপক্ষের হামলায় সুজন শেখ ঘটনাস্থলে নিহত হন। সুজন শেখ ওই গ্রামের মজিবর শেখের ছেলে।
পরে খবর পেয়ে পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রসে আনে। আহতদের মুকসুদপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে ভর্তি করা হয়।
মুকসুদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মির্জা আবুল কালাম আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ জেনালের হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখনও কোন মামলা হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫:৫৩:৫৯ ● ৩৪৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ