বাউফলে বহিরাগত ঠেকাতে নৌ পুলিশের পাহারা

প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ » বাউফলে বহিরাগত ঠেকাতে নৌ পুলিশের পাহারা
শুক্রবার ● ১০ এপ্রিল ২০২০


বাউফলে বহিরাগত ঠেকাতে নৌ পুলিশের পাহারা

বাউফল (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

 করোনার বিস্তার রোধে বহিরাগতদের ঠেকাতে বাউফলের জল সীমানায় পাহারা বসিয়েছে কালাইয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা। করোনা ভাইরাসে আশঙ্কাজনকভাবে আক্রান্ত হওয়া কয়েকটি জেলাকে লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই মানুষ ভয়ে জলপথে বাউফলসহ পটুয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলায় আসছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় এমন খবর প্রকাশ হওয়ার পরই কালাইয়া নৌ পুলিশ তাদের পাহারা জোরদার করেছেন।
কালাইয়া নৌ পুলিশ ফাঁড়ির এসআই মো.সোহাগ ফকির জানান, করোনা ভাইরাস থেকে জনসাধারণকে রক্ষার জন্য সরকার নারায়নগঞ্জ, গাজিপুর, নরসিংদীসহ ঢাকার অনেকাংশ লকডাউন করেছেন। ওই সকল এলাকায় করোনার প্রভাব বেশি পরিলক্ষিত হওয়ায় সেখানে থাকা পটুয়াখালী জেলার মানুষ সেখানের হোম কোয়ারেন্টাইনে না থেকে ভয়ে পালিয়ে নৌকা, ট্রলার, স্পিড বোড, ট্রাক, এ্যাম্বুলেন্স এমনকি অটো বাইকে করেও চলে আসছে। ভয়ে পালিয়ে আসা মানুষজন নারায়নগঞ্জ, চাঁদপুর ও নোয়াখালী থেকে নদী পথে বাউফলের সীমান্তবর্তী বাখেরগঞ্জ উপজেলা এবং ভোলা হয়ে বাউফলসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকে পড়ছে। এরফলে বাউফলের মানুষের মধ্যে করোনা আতঙ্ক বেশি ছড়িয়ে পড়ছে। মূলতঃ একারণেই বাউফলের জলসীমানায় পাহারা জোরদার করা হয়েছে। আশা করি এখন আর কোন বহিরাগত নদী পথে বাউফলে ঢুকতে পারবে না।
বাউফলের একাধিক সাংবাদকর্মীদের মতে, লকডাউন হওয়া জেলাগুলো থেকে বাউফলে হরহামেশা মানুষ আসছে। ট্রাকে মালামালের সাথে গোপণে মানুষও বহন করছে। বাউফলের বিভিন্ন চর থেকে তরমুজ নিয়ে বহু ট্রলার ঢাকা, ফতুল্লা, চাঁদপুর, বরিশাল যাচ্ছে। এই যানবাহনগুলোও ফেরার পথে মানুষ নিয়ে আসছে। এরা এসেই আত্মগোপাণে থাকে। আবার কেউ কেউ প্রভাব বিস্তার করে বন্ধু-বান্ধবসহ সকলের সাথে মেলামেশা করছে। গ্রামের চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছে। এরফলে বাউফলে যে কোন মূহূর্তে করোনার ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। বাউফলের সাংবাদিকরা মনে করছেন, কেবলমাত্র জল সীমানায় পাহারা বসালেই হবে না। বগার ফেঁড়িঘাটে পাহারা বসিয়ে প্রত্যেকটি ট্রাক, এ্যাম্বুলেন্স চেক করতে হবে।
কালাইয়া ইউপি চেয়ারম্যান এস.এম. ফয়সাল আহমেদ মনির হোসেন মোল্লা জানান, কালাইয়ার সাথে ভোলা জেলার জল সীমান্ত রয়েছে। সেই সীমান্তগুলোকে করা নজরদারির মধ্যে রাখার জন্য নৌ পুলিশকে অনুরোধ করা হয়েছে। লকডাউন হওয়া জেলাগুলো থেকে যারা কালাইয়াসহ বাউফলে এসেছেন, প্রশাসন ও পুলিশের উচিৎ তাদেরকে খুঁজে বের করে হোম কোয়ারেন্টামে বাধ্য করা। তিনি বলেন, কালাইয়া বন্দরে মাছের বাজারের সাথে কাঁচা বাজার ছিল। ফলে মানুষের সমাগম বেশি হতো এবং সামাজিক দুরত্ব রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়তো। এখন কাঁচা বাজার দুরে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। কালাইয়া বন্দরে এখন লোক সমাগম হচ্ছে না। জরুরী প্রয়োজন ব্যতিত কেউ ঘর থেকে নামছেন না। আমার এলাকার মানুষের মঙ্গলের জন্যই আমি এই অবস্থাটা ধরে রাখতে চাই।
বাউফলের সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ মনে করেন, বাউফলের পার্শ্ববর্তী দুমকী উপজেলায় গতকাল (৯ এপ্রিল) করোনায় আক্রন্ত হয়ে একজন মারা  যান। ওই ব্যাক্তি ৪/৫ দিন পূর্বে ঢাকা থেকে এসেছিল। দুমকীতে মৃত্যুর পর বাউফলে করোনা আতঙ্ক বেশি ছড়িয়ে পড়ছে। বাউফলে করোনা প্রতিরোধে প্রশাসন ও পুলিশের আরো কঠোর হওয়া দরকার। কোনভাবেই জরুরী পণ্য বহন ছাড়া ট্রাক বা অন্যান্য মালবাহী গাড়িগুলোকে ঢুকতে দেয়া উচিৎ হবে না। অন্তঃত এপ্রিল মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত এ ধারাটা অব্যহত রাখা দরকার।

এপি/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৬:২৩:৫৭ ● ১৩৯৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ