গোপালগঞ্জে ডিবি’র ওসি কামরুলের যত দূর্নীতি ও অপকর্ম!

প্রথম পাতা » ঢাকা » গোপালগঞ্জে ডিবি’র ওসি কামরুলের যত দূর্নীতি ও অপকর্ম!
সোমবার ● ৬ এপ্রিল ২০২০


গোপালগঞ্জে ডিবি’র ওসি কামরুলের যত দূর্নীতি ও অপকর্ম !

গোপালগঞ্জ সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

গোপালগঞ্জে সীমাহীন দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতাসহ নানান অভিযোগে দায়িত্ব থেকে ক্লোজড ডি,বি পুলিশের সাবেক ওসি মোঃ কামরুল হোসেনের অপকর্মের খতিয়ান বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে। সম্প্রতি তদন্তে মোঃ কামরুল হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমান পাওয়ায় তাকে পুলিশ লাইনস্ েক্লোজ করা হয়।
পুলিশের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা যায়, গেল ৫ মার্চ সন্ধ্যার দিকে গোপালগঞ্জ শহরের মেঘলা জুয়ের্লাসের কারিগর সুজিত বালাকে পুলিশ লাইনস্ মোড় থেকে স্বর্ন চোরাচালানের সাথে জড়িত থাকার সন্দেহ ৪০ ভরি স্বর্ণের বারসহ আটক করে ডিবি’র ওসি মোঃ কামরুল। পরে তিনি তাকে ডিবি অফিসে নিয়ে আসেন এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে তার থেকে কাছ জোর করে দেড় লক্ষ টাকা আদায় করেন।
এরপর সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে এসবের ভিডিও ধারণ করে তিনি সুজিতকে ছেড়ে দেন। পরদিন সুজিত বালা ডিবি’র ওসি কামরুল হোসেনের বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
সুজিত বালা জানায়, তিনি একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ি। ঢাকা থেকে সে বৈধভাবে এসব স্বর্ণ কিনে আনেন এবং তার কাছে থাকা এ সংক্রান্ত যাবতীয় ডকুমেন্ট ডিবি’র ওসি’কে দেখাতে চাইলে তাতে তিনি কোন কর্ণপাত না করে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখান। এরপর প্রথমে তিনি তার কাছে নয় লাখ টাকা দাবী ও পরে টাকার পরিমান কমিয়ে ৩ লাখ টাকা  দাবী করেন। অনেক আকুতি মিনতি করলেও কোন লাভ হয়নি। অবশেষে অনেক দেনদরবারের পর বন্ধু বান্ধব ও আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে ধার দেনা করে দেড় লাখ টাকা ম্যানেজ করে ওসি কামরুল হোসেনকে দিয়ে মুক্তি পায়। সুজিত সদর উপজেলার বাঘাজুড়ি রমেশ বালার ছেলে।
এদিকে, জেলার মুকসুদপুর উপজেলার বনগ্রাম বাজার এলাকার পুলিশের তালিকাভুক্ত জুয়াড়ি শাহ আলমের কাছ থেকে প্রতি মাসে মোটা অংকের টাকা নেওয়ার বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই এলাকায় সরেজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে এসব তথ্য জানা যায়।এলাকাবাসীর অভিযোগ ওসি কামরুলের পরোক্ষ মদদে শাহ্ আলম ওই এলাকায় দীর্ঘদিনর ধরে বড় বড় জুয়ার আসর চলয়ে আসছিল।
ওসি কামরুলের দূর্নীতি অনুসন্ধান করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে তার বহু নারীতে আসক্তির কাহিনী। কামরুলের পরকীয়ার জালে ফেঁসে সর্বশান্ত হয়েছেন অনেক নারী। কামরুলের তিনটি বিয়ে করার তথ্য পাওয়া যায়। কয়েকবছর আগে একটি কন্যা সন্তানসহ দ্বিতীয় স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে মাদারীপুরের শ্রনদী গ্রামের এক ইতালী প্রবাসীর স্ত্রীকে ভাগিয়ে নেন কামরুল। ফলে ওই হতভাগা প্রবাসী যুবকের ১০ বছরের সংসার তচনচ হয়ে যায়।
্বিদেশের মাটিতে গায়ের ঘাম ঝড়িয়ে অতি কষ্টে অর্জিত ওই যুবকের স্ত্রীর কাছে পাঠানো সারা জীবনের সঞ্চয় ও স্বর্ণলংকারসহ মূল্যবান জিনিসপত্র চলে যায় কামরুলের হেফাজতে। প্রিয় সন্তানের দুঃখ সইতে না পেরে ইতালী প্রবাসী ওই যুবকের পিতা সাবেক সেনা সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধা হাবিবুর রহমান মাতুব্বর হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে পরোপারে পাড়ি জমান।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার পুকুরিয়া গ্রামে ওসি কামরুলের গ্রামে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ডি,বি’র ওসি কামরুল একইভাবে প্রথম স্ত্রীকে ডিভোর্স করে দ্বিতীয় স্ত্রী বিয়ে করেছিলেন। পরে একটি কন্যা সন্তানসহ তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রীকেও ডিভোর্স দিয়ে এক ইতালী প্রবাসীর স্ত্রীকে ভাগিয়ে এনে বিয়ে করেন।
এ ব্যপারে গোপালগঞ্জের ডিবি পুলিশের সাবেক ওসি কামরুল হোসেনর সাথে কথা বললে তিনি এসব বিষয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ফোন কেটে দেন।

এইচবি/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৬:০৪:২৭ ● ৩৯১ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ