কলাপাড়া সাগরকন্যা অফিস॥
কলাপাড়ায় করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় চলমান লকডাউনে কর্ম বিমুখ হয়ে পড়েছে অর্ধ লক্ষ মানুষ। এসব মানুষের খাদ্যের যোগানে চলছে সরকারী অপ্রতুল খাদ্য সহায়তা। কলাপাড়ায় প্রায় ৫০টি এনজিও’র কার্যক্রম চললেও হতদরিদ্র এসব মানুষের পাশে নেই তারা কেউ। বর্তমান করোনা পরিস্থিতে এনজিও গুলোর এমন আচরনে হতাশা এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছে প্রশাসনসহ সাধারণ মানুষ। এছাড়াও গণতন্ত্র, উন্নয়ন, সুশাসন, ভোট ও ভাতের অধিকার নিয়ে একাধিক রাজনৈতিক দল নির্বাচনের সময় শ্রমজীবী এসকল মানুষের দ্বারে দ্বারে প্রতিশ্রুতির ডালি নিয়ে ঘুরলেও এখন এ অসময়েও শ্রমজীবী এসব মানুষের পাশে নেই রাজনৈতিক দলগুলো। ফলে সরকারের একমাত্র খাদ্য সহায়তায় শ্রমজীবী এসকল হতদরিদ্র পরিবার গুলোর কোন দিন উনুন জ্বলছে, আবার কোন দিন জ্বলছে না।
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীসহ সাধারণ মানুষের অনেকে অভিযোগে জানান, ঘূর্নিঝড় সৃস্টি হলে ক্যামেরা হাতে গণমাধ্যমকর্মীদের চেয়ে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েন এনজিও গুলোর কর্মীরা। অপ্রতুল সাহায্যের নামে শ্রমজীবী হত দরিদ্র মানুষ গুলোর সাথে চলে ফটোশেসন। এসব ফটো দেখিয়ে দাতাদের আকৃষ্ট করে আর্থিক সহায়তা নিলেও এসব মানুষের ভাগ্যে জোটে যৎসামন্য। বর্তমান করোনা পরিস্থিতে সারা দেশ লকডাউন ঘোষণার পর একইভাবে এসব মানুষের পাশে মাঠে থাকার কথা থাকলেও দেখা মিলছে না কোন এনজিও’র। এতে হতাশা এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেছে প্রশাসনসহ সাধারণ মানুষ।
এনজিও থেকে ঋণ গ্রহনকারী আয়েশা বেগম (৩৬) সাগরকন্যাকে জানান, ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ সহজ না হওয়ায় এনজিও থেকে ঋণ গ্রহণ করেছেন। দু:সময়ে কিস্তি বাদ দেয়ার সুযোগ নেই। সারা বছর মোটা অংকের সুদ নিলেনও দু:সময়ে এরা কোন সাহায্য করেনা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তপন কুমার ঘোষ জানান, করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের নির্দেশে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে উপজেলায় ৪৩ মেট্রিক টন চাল ও নগদ দু’লক্ষ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যা দিয়ে উপজেলার ২০০০ পরিবারকে চাল, ডাল, তেল, আলু, লবন ও সাবান সম্বলিত প্যাকেজ সহায়তা দেয়া হয়েছে। এছাড়া স্থানীয় হাতেগোনা দু’তিনটি সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে খাদ্য সহায়তা নিয়ে কিছু হতদরিদ্র কর্মহীন পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে।
কলাপাড়া ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় এনজিও গুলো শুধুমাত্র সচেতনতার হ্যান্ডবিল বিতরণ ছাড়া দুস্থ মানুষের জন্য কিছু করেছে বলে আমার জানা নেই। তবে এ পরিস্থিতিতেও তারা কিস্তি আদায় কার্যক্রম পরিচালনার চেষ্টা করায় তাদের নিষেধ করা হয়েছে। ইউএনও শহিদুল হক আরও বলেন, ‘স্থানীয় মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান ও সাংসদ দুস্থ মানুষের জন্য কিছু খাদ্য সহায়তা বিতরণ করেছে। দু’চারদিনের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, বিত্তবান ব্যক্তি ও এনজিওদের নিয়ে সভা ডাকা হবে।
এমবি/এনবি