কলাপাড়া সাগরকন্যা অফিস॥
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় বালিয়াতলী খেয়াঘাটের ভাড়া নির্ধারিত ৪টাকা হলেও আদায় করছে ২০টাকা! এ নিয়ে করোনা ভাইসের অজুহাত এবং ইজাদারের স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংশ্লিষ্ট ইজারাদারকে অতিরিক্ত টাকা দিতে ব্যর্থ হলে খারাপ ব্যবহার করা। প্রতিবাদ করলে যাত্রীদের লাঞ্ছিত করা হয়। যেন কোন নিয়ম-নীতি নেই। প্রশাসন নিরব। ইজারাদার ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করছে। জিম্মি হয়ে আছেন কুয়াকাটার বিকল্প পথে চলাচলকারী পাঁচ ইউনিয়নের লাখো মানুষ এমনকি যাত্রীদের হাতে থাকা ৫থেকে ১০কেজি ওজনের পণ্য বা মালামাল পারাপারের জন্য ৫০-৭০ টাকা অতিরিক্ত আদায় করছে। মোটরসাইকেল পারাপারে ভাড়া ৮০টাকা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অবৈধভাবে খেয়াঘাট ইজারাদার সরকার নির্ধারিত টোলের চেয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায় করায় এই ঘাট দিয়ে চলাচলকারী পাঁচ ইউনিয়নের যাত্রী সাধারণের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
সম্প্রতি বালীয়াতলী খেয়া ঘাটে সরেজমিন গেলে দেখা যায়, ঘাটে যাত্রী সাধারণ বিভিন্ন যানবাহন ও মালামাল পারাপারে সরকার অনুমোদিত খেয়ার টোল চার্ট সহজে দর্শনীয় জায়গায় নোটিশ বোর্ড আকারে টানানোর বিধান থাকলেও দুই পারের কোথাও ভাড়া চার্ট টাঙ্গানো হয়নি। ইজারা টাকা অনেক বেশি নেওয়া হয়েছে- এমন অজুহাতে এ চাঁদাবাজি করে চলছে। যেখানে একটি ছাগলের খেঁয়া ভাড়া হওয়ার কথা চার টাকা। রাখা হয়েছে এক শ’ টাকা করে। প্রতিটি গরু/মহিষ ১০ টাকা, রাখা হয়েছে ২৫০ টাকা। মানুষ, যাত্রী প্রতি ভাড়া চার টাকা। সন্ধ্যার পরই নেয়া হচ্ছে ১০টাকা। আট টাকার মোটরসাইকেল ভাড়ায় রাখা হচ্ছে ৩০/৪০ থেকে ৫০ টাকা। রাত হলে এক শ’ টাকা পর্যন্ত। এভাবে বাইসাইকেল চার টাকা, বিভিন্ন মালামাল ৪০ কেজি পর্যন্ত তিন টাকা এবং রিক্সা-ভ্যান ছয় টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা আছে। উপজেলা প্রশাসনের নির্ধারিত এ ভাড়া রেট অনুযায়ী কলাপাড়ায় অন্তত ২০টি খেঁয়া ইজারা দেয় উপজেলা প্রশাসন। সব ক’টিতে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু আলোচিত বালিয়াতলী খেয়াঘাট। কোন টোলরেট চার্ট টানানো নেই। কোন নিয়মের বালাই। আবার রমজান কিংবা কোরবানির ঈদকে ঘিরে বিশেষ চাঁদাবাজি চলে। কোন কৃষক কোরবানির গবাদিপশু পার করলে রাখা হচ্ছে ২০০-২৫০ টাকা। কোন কোন ক্ষেত্রে আরও বেশি। হাতে বহন করা ব্যাগ থেকে শুরু করা কোন মালামাল নিলে যা খুশি তাই রেখে দিচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে , উপজেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে বাংলা ১৪২৬ সালের জন্য প্রায় এক কোটি টাকায় এ খেঁয়াটি ইজারা হয়েছে। সর্বোচ্চ দরদাতা রয়েছেন মো. মুছা। কুয়াকাটার বিকল্প পথ হওয়া বিভিন্ন পর্যটক ও লালুয়া, বালিয়াতলী, ধুলাসার, ডালবুগঞ্জ ও মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের মানুষ এ পথে চলাচল করছে। প্রতিদিন গড়ে কমপক্ষে তিন হাজার মানুষ, তিন শতাধিক মোটরসাইকেল পার হয় এ খেঁয়ায়। এছাড়া বিভিন্ন রুটের মাছসহ বিভিন্ন পন্য নিয়ে আসেন মানুষ। সবাই জিম্মি দশায় পড়েছেন।
ঘাট ইজারাদার গ্রহনণকারী মো মুসা বলেন, পাঁচ টাকার ভাড়ার ২০ টাকা বেশি কথা অস্বীকার করে বলেন, আমি জানিনা। আমার লোকদেরকে বলতে আছি।
বালীয়াতলীর ইউনিয়নের চরবালীয়াতলী গ্রামের মো.ফকরুল আলম বলেন, বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অবৈধভাবে খেয়াঘাট ইজারাদার ফ্রি-স্টাইলে চাঁদাবাজি করে চলছে। জিম্মি হয়ে আছেন চলাচলকারী পাঁচ ইউনিয়নের লক্ষধিক মানুষ। প্রতিবাদ করলে যাত্রীদের লাঞ্ছিত করা হয়। যেন কোন নিয়ম-নীতি নেই। প্রশাসনের নাগের ডগায় এসব অপকর্মের চিত্র গুলো কি চোখে পড়েনা। না বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে!
কলাপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান এস,এম,রাকিবুল আহসান বলেন, আমরা তদন্ত করে দেখছি। লেখিত বা প্রমান পেলে আমাদের খুবই ভাল হতো। ইজারাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবুল হাসনাত মো.শহীদুল হক জানান, ইজারাদারদের বিরুদ্ধে এখনই পদক্ষেপ গ্রহন করছি। যাতে তারা এভাবে খেয়া ভাড়া নিতে না পারে।
এইচকে/এনবি