বিলাস দাস, পটুয়াখালী থেকে॥
পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলায় টানা তিনদিন পানি খেয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা অসহায় বৃদ্ধ সোবাহান হাওলাদারের ঝুপড়ি ঘরে খাবার নিয়ে হাজির হয়েছেন পটুয়াখালীর এসপি। ওই বৃদ্ধের পছন্দের সকল প্রকার খাদ্য সামগ্রী নিয়ে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এসপি মোহম্মদ মইনুল হাসান উপস্থিত হন। এর পূর্বে ওই বৃদ্ধকে বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনের সুত্র ধরে এসপি খাবার সামগ্রী নিয়ে তাঁর কাছে হাজির হন বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
করোনা মোকাবেলা পরিস্থিতি নিয়ে গত কয়েক দিনের অঘোষিত লকডাউনে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে পরিত্যক্ত বৃদ্ধ সোবাহান হাওলাদারের জীবন-যাপন। পটুয়াখালীর দুমকী থানার পশ্চিম পাশে একটি ঝুপড়ি ঘরে গত কয়েকদিন পানি পান করে চলছিল তার জীবন। এ নিয়ে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে স্বচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে অন্যান্যদের ন্যয় মঙ্গলবার মধ্য রাতে সংবাদটি পটুয়াখালী পুলিশ সুপার মোহম্মদ মইনুল হাসানের দৃষ্টিগোচর হয়। ওই রাতেই দুমকী থানার অফিসার ইনচার্জ মেহেদী হাসানকে পাঠিয়ে অসহায় বৃদ্ধের খোঁজ নেন এসপি। ওসির মাধ্যমে ওই বৃদ্ধের পছন্দের খাবারগুলো এসপি নিজে অবগত হন। বুধবার সকালে বৃদ্ধের পছন্দের সেইসব রসালো ফল এবং টানা ১৫ দিনের চাল, ডাল, তেলসহ যাবতীয় একটি পরিবারের নিত্য প্রয়োজনীয় খাবার সামগ্রী নিয়ে এসপি তার বাড়ীতে হাজির হয়ে বৃদ্ধের হাতে তুলে দেন। এসময় পটুয়াখালী বাউফল সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক হোসেনসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তা ও গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এসপি’র মাধ্যমে খাবার পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন বৃদ্ধ সোবাহান হাওলাদার। কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে তিনি জানান, দুমকী উপজেলা চত্বরের পাশে গত কয়েকদিন অনাহারে কাটিয়ে দিয়েছেন তিনি। কেউ তার পাশে খাবার নিয়ে দাঁড়ায়নি। কত মানুষ তার পাশ থেকে আনাগোনা করেছে। কেউ তাকে এক গ্লাস পানিও এগিয়ে দেয়নি। অথচ যাদের দেখলে ভয় করি সেই পুলিশ খাবার নিয়ে তার ঝুপড়ি ঘরে এসেছে!
এ প্রসঙ্গে এসপি মোহম্মদ মইনুল হাসান বলেন, মঙ্গলবার মধ্য রাতে বৃদ্ধের অসহায়ত্ব নিয়ে অনলাইন নিউজ পোর্টালে একটি প্রতিবেদন আমার চোখে পড়ে। তাৎক্ষনিক সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে অবহিত করে খোঁজ-খবর নেই। বুধবার সকল প্রকার খাবার সামগ্রী নিয়ে তার বাড়িতে যাই।

বিডি/এনবি