অতুল পাল, বাউফল (পটুয়াখালী) থেকে॥
মরণব্যাধি করোনার প্রভাবে দেশ লক ডাউন হয়ে যাচ্ছে এমন গুজবে বাউফলের সকল হাট-বাজারে ব্যবসায়িরা সিন্ডিকেট করে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছে নিত্যপণ্য। সাধারণ মানুষও গুজবে কান দিয়ে ধারকর্য করে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পণ্য ক্রয় করে রাখছে। অসহায় হয়ে পড়ছে খেটে খাওয়া মানুষ। অস্বস্থিতে পড়েছে সকল শ্রেণি পেশার মানুষ। এমনই অবস্থায় শুক্রবার উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে সোয়া দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে উপজেলা প্রশাসন।
সরেজমিন দেখা গেছে, ১৯ তারিখ সকালে কালাইয়া বাজারে প্রতি কেজি পিয়াজের খচরা মূল্য ছিল ৪০ টাকা কিন্তু বিকেলেই প্রতি কেজি পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে আশি টাকায়। আলু প্রতি বস্তায় বেড়েছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। প্রতি বস্তা মোটা চাউলে বৃদ্ধি পেয়েছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। চিকন চাউলের প্রতি বস্তায় বেড়েছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। দাম বৃদ্ধি পেয়েছে সব্জি-তরকারি, মাছ ও মাংসেরও। সাবান, হ্যান্ডওয়াস ইত্যাদি স্যানেটারি জাতীয় পণ্যেরও দাম বেড়েছে। বৃহষ্পতিবার রাত থেকে কালাইয়া বন্দরে হ্যান্ডওয়াস পাওয়া যায়নি। এসবই সিন্ডিকেট করে বিক্রি করা হচ্ছে বলে ক্রেতারা অভিযোগ করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালাইয়া বন্দর সদর রোডের এক বাসিন্দা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, শুক্রবার চাউল ব্যবসায়ি গনেশ সাহার দোকান থেকে চাউল কিনতে গেলে ৩০ টাকার চাউল ৪০ টাকা চেয়েছেন। দাম বেশি কেন এমন প্রশ্ন করলে গনেশ সাহা জানায়, চাউলের দাম আরও বাড়বে। শুক্রবার কালাইয়া বাজারে পিয়াজ ক্রয় করতে গিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দাসপাড়া গ্রামের আবু বকর নামে এক ব্যক্তি। তিনি জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে পিয়াজের কেজি ছিল ৪০ টাকা। অথচ সেই পিয়াজ বৃহষ্পতিবার রাত থেকে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা দরে।
তথ্যানুযায়ি বাউফলে ৪০টি ছোট বড় হাট বাজার রয়েছে। সিন্ডিকেট করে সকল বাজারেই দাম বৃদ্ধি করে বিক্রি করা হচ্ছে নিত্যপণ্য। উপজেলার কাছিপাড়া, বগা, কনকদিয়া, বাবুর হাট, মিলঘর, কালিশুরী ইত্যাদি সকল বাজারে একই অবস্থা বিরাজ করছে। নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের উদ্বেগের কথা লেখালেখি হচ্ছে। এমতাবস্থায়, শুক্রবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.জাকির হোসেনের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অতিরিক্ত মূল্যে নিত্যপণ্য বিক্রির দায়ে বগা বাজারের এক ব্যাবসায়ির ২০ হাজার, আয়লা বাজারের এক ব্যবসায়ির ৫ হাজার এবং কালাইয়া বন্দরের চার ব্যাবসায়ির দুই লাখ টাকা জরিমানা করেন। এসময় সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো, আনিচুর রহমান বালি এবং বাউফল থানার পুলিশ সদস্যরা সাথে ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন জানান, মোবাইল কোর্ট অব্যহত থাকবে। কোনভাবেই দ্রুব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণের বাহিরে যেতে দেয়া যাবেনা।