আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
সন্ত্রাসীদের এসিড হামলার শিকার হয়ে প্রাণ ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বরগুনার আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের খাকদান গ্রামের মজিদ গাজী। এডিস মেরে তার শরীর ঝলসে দিয়েছে সন্ত্রাসীরা। ১২ দিন চিকিৎসা শেষে সন্ত্রাসীদের ভয়ে বাড়ী যেতে পারছেন না। এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। মজিদ বলেন, এসিড মেরে আমাকে ঝলসে দিয়েও খ্যান্ত হয়নি সন্ত্রাসী হামজের হাওলাদার ও তার সহযোগীরা। আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। আমি সন্ত্রাসীদের ভয়ে বাড়ী যেতে পারছি না। আমাকে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমাকে এলাকা থেকে তাড়িয়ে আমার বাড়ী ঘর দখলের জন্য হামজের হাওলাদার ও তার সহযোগীরা এ কাজ করছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। শনিবার আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়নে এসে এ অভিযোগ করেন মজিদ গাজী।
জানাগেছে, ২০১৭ সালে আমতলী উপজেলার দক্ষিণ পশ্চিম আমতলী গ্রামের মজিদ গাজী কুকুয়া ইউনিয়নের খাকদান গ্রামের কাছেম হাওলাদারের কন্যা মোমেলাকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিয়ের পর মজিদ তার সমুদয় সম্পত্তি বিক্রি করে খাকদান গ্রামের দ্বিতীয় স্ত্রীর বাবার বাড়ীর এলাকায় বাড়ী নির্মাণ করে বসবাস করে আসছে। গত এক মাস পূর্বে দ্বিতীয় স্ত্রী মোমেলা পালিয়ে ঢাকায় চলে যায়। এরপর থেকে মজিদ গাজীর সাথে তার স্ত্রী ও স্ত্রীর ভাই হামজের হাওলাদারের সাথে বিরোধ চলে আসছে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারী গভীর রাতে সুরঙ্গ খুড়ে ৩-৪ জনের একটি সন্ত্রাসী দল মজিদ গাজীর ঘরে প্রবেশ করে। পরে ঘরে থাকা সতের হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি টের পেয়ে মজিদ ডাকচিৎকার দিলে তারা মজিদকে এসিড মেরে ঝলসে দেয়। এসিডের ঝলকানিতে মজিদের বুক ও হাতে গুরুতর জখম হয়। খবর পেয়ে স্বজনরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে ২০ ফেব্রুয়ারী আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। ওই হাসপাতালের কর্র্র্র্তব্যরত চিকিৎসক তাকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করেন। পটুয়াখালী হাসপাতালে ১২ দিন চিকিৎসা শেষে গত সোমবার বাড়ীতে আসেন। বাড়ীতে আসার পরপরই সন্ত্রাসীরা তাকে জীবন নাশের হুমকি দেয়। সন্ত্রাসীদের ভয়ে মজিদ এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। গত পাঁচ দিন ধরে বাড়ীতে যেতে পারছেন না। এদিকে একটি মহল সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিয়ে মজিদের এ ঘটনাকে সাজানো বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, মজিদ গাজীর স্ত্রী মোমেলার ভাই হামজের হাওলাদার ও তার সহযোগীরা মজিদকে এলাকা ছাড়া করে বাড়ী ঘর দখল করার জন্য এসিড মেরে ঝলছে দিয়েছে এবং প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে।
এ বিষয়ে হামজের হাওলাদারের মুঠোফোনে বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা। মজিদ আমাকে ফাঁসানোর জন্য এসিডের নাটক সাজিয়েছে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার আলহাজ্ব হারুন অর রশিদ বলেন, মজির গাজীর অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আমতলী থানার ওসি আবুল বাশার বলেন, বিষয়টি জেনেছি। এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এএইচকে/এমআর