সাগরকন্যা ডেস্ক ॥
‘বাঙালির জয়, কবিতার জয়’ এই শ্লোগানকে ধারণ করে দ’ুদিনব্যাপী ৩৩তম জাতীয় কবিতা উৎসব ২০১৯ শুরু হয়েছে। শুক্রবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার চত্বরে বাংলাদেশ কবিতা পরিষদ এ উৎসবের আয়োজন করে। জাতীয় কবিতা পরিষদের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য কবি আসাদ চৌধুরী উৎসবের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মুহাম্মদ সামাদ।
বক্তব্য রাখেন- উৎসবের আহ্বায়ক রবিউল হুসাইন, কবিতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তারিক সুজাত। উৎসবে বিভিন্ন দেশ থেকে আমন্ত্রিত কবি-সাহিত্যিকরা অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে শোকপ্রস্তাব পাঠ করেন পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক আমিনুর রহমান সুলতান এবং ঘোষণাপত্র পাঠ করেন কবি রুবী রহমান। উদ্বোধকের বক্তব্যে জাতীয় কবিতা পরিষদের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য আসাদ চৌধুরী বিভিন্ন কবিদের কবিতার পঙক্তি এবং তার মর্মার্থ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে নষ্ট রাজনীতির প্রভাবমুক্ত বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে কোনও যুদ্ধাপরাধী নেই, এ এক বিশাল অর্জন। রাজনীতির পাশাপাশি তরুণদের গণজাগরণ মঞ্চ জনগণের ইচ্ছাটাকে তুলে ধরেছিল। এসময় তিনি সন্দীপ বন্দোপাধ্যায়ের অনুবাদ করা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পশ্চিমা গণতন্ত্রের আশঙ্কা নিয়ে দ্য রবারি অব দ্য সয়েল ভাষণটি তুলে ধরে বলেন, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, স্বৈরাচারবিরোধী এ প্রতিষ্ঠানটি স্বাভাবিকভাবেই বলতে চায় বাঙালির জয় কবিতার জয়। অনুষ্ঠানে রবিউল হুসাইন বলেন, কবি শুধু সুদূরের বাসিন্দা নয়, তাকেও সামাজিক দায়িত্ব পালন করতে হয়। সেই উদ্দেশ্যে জাতীয় কবিতা পরিষদ কবিতার মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে এতদিন ধরে সফলভাবে। এতে প্রমাণিত হয় যে, কবিতার প্রয়োজনীয়তা মানুষ, সমাজ এবং রাষ্ট্রের সবসময়ের জন্যে আছে। কবির হয়তো ছাড়পত্র দরকার, কিন্তু কবিতার তা দরকার পড়ে না। কবিতা স্বপ্ন, সংগ্রাম, ভালোবাসা, জীবন ও বাস্তবতার ভাষ্যরূপ দেয়। ধর্ম, জাতি, বর্ণ, শ্রেণি বা গোষ্ঠী মানুষ ও দেশকে যত বিভক্ত করে, তার বিপরীতে সবাইকে শান্তি ও কল্যাণ এবং শ্রেয়োবোধ উজ্জীবিত করে। এইখানে কবিতার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। জাতীয় কবিতা পরিষদ সবার সহযোগিতায় সেই ল্েয দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে কবি মুহাম্মদ সামাদ বলেন, বাংলাদেশে আর কোনোদিন যেন মুজিববিরোধী, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অন্ধকারের শক্তি মাথা তুলতে না পারে-এখন আমাদের সেই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার সময়। তাই ৩৩তম জাতীয় কবিতা উৎসবের মর্মবার্তা আমরা ঘোষণা করেছি-বাঙালির জয়, কবিতার জয়। এর আগে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, পটুয়া কামরুল হাসানের সমাধি এবং শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান পরিষদের নেতারা। জাতীয় সংগীত পরিবেশন এবং পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে উৎসব শুরু হয়। এরপর একুশের গান ও উৎসব সংগীত পরিবেশন করেন পরিষদের সদস্যরা।
এফএন/কেএস