দুমকিতে সেচ সংকটে বোরো’র আবাদ বিঘ্নিত

প্রথম পাতা » ব্রেকিং নিউজ » দুমকিতে সেচ সংকটে বোরো’র আবাদ বিঘ্নিত
সোমবার ● ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২০


দুমকিতে সেচ সংকটে বোরো’র আবাদ বিঘ্নিত

দুমকি (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

পটুয়াখালীর দুমকিতে সেচ সুবিধার অপ্রতুলতায় বীজ তৈরী ও বীজ বপণ করতে না পারায় ভরা মৌসুমে ইরি-বোরো’র আবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছে চাষীরা। প্রাকৃতিক পানির উৎস খাল-নদীতে পানি শূন্যতার কারনে দুমকির কৃষকরা ইরি-বোরো’র আবাদ নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছেন।
স্থানীয় সুত্র জানায়, ওয়াপদা বেষ্টিত উপজেলার আভ্যন্তরীণ মুরাদিয়া নদীর পানি শুকিয়ে যাওয়ায়, ভরাট হওয়া খাল-বিল, পুকুর ডোবায় মারাত্মক পানি শূন্যতা দেখা দিয়েছে। সেচের পানির অভাবে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও চাষীরা ইরি-বোরোর আবাদ করতে পারছে না। পানির অভাবে শত শত হেক্টর ফসলি জমি অনাবাদি পড়ে আছে। প্রত্যন্ত এলাকার মাঠ, ঘাট ফসলি জমি শুকিয়ে চৌচির হয়ে গেছে। মুরাদিয়ার নদীর তীরবর্তি মুরাদিয়া ও শ্রীরামপুর ইউনিয়নের খাল-পুকুর ও নালা গুলোতে পানি শূন্যতায় কৃষকরা বীজ তলা তৈরী করতে পারছে না। একই অবস্থা বিরাজ করছে পাংগাশিয়া, আংগারিয়া ও লেবুখালী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকায়। মৌসুমের শুরুতে বীজতলা তৈরী ও বীজ বপণ করতে না পারায় কৃষকদের বীজ সংকটের মুখোমুখী হতে হবে। বীজৈর অভাবে ইরি-বোরোর আবাদই এখন ভেস্তে যাওয়ার শংকায় কৃষকরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। শ্রীরামপুর ইউনিয়নের দক্ষিন শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা সেকান্দার আলী হাওলাদার (৬৬)বোরো’র আবাদ প্রসঙ্গে বলেন, পানির অভাবে বীজতলা তৈরী করতে না পারায় বোরোর আবাদ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছি। সেচের পানির অভাব থাকায় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বোরোর আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না। নদীর তীরবর্তি এলাকায় জমা-জমি আছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে ওই কৃষক জানান, শুষ্কমৌসুমে মুরাদিয়া নদী শুকিয়ে যাওয়ায় সেচের পানি মেলানো কস্টকর। পাম্প সরবরাহ না পাওয়া গেলে নদীর তলা থেকে সেচের পানি ওঠানো অত্যন্ত দুরহ। সে কারনেই এ অঞ্চলের কৃষকরা বোরোর আবাদ নিয়ে মহা সংকটের মুখে পড়েছে। চরবয়েড়া গ্রামের কৃষক আবদুল জলিল মৃধা জানান, এলাকার প্রায় সবগুলো খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি শূন্যতা বিরাজ করছে। সেচ সুবিধার অভাবে ওই গ্রামের কৃষকরা বোরোর আবাদ করতে পারছে না। একই অভিযোগ করেছেন পার্শ্ববর্তি আংগারিয়া ইউনিয়নের জলিশা গ্রামের বাসিন্দা মূছা ফকির, জিয়াউল হাসান, গোলাম হোসেনসহ অনেক কৃষকরা। খোঁজনিয়ে জানা যায়, উপজেলার অভ্যন্তরীণ ছোট-বড় খাল, নালা, দিঘি, পুকুর, ডোবার বেশীর ভাগই পানি শূন্যায় শুকিয়ে রয়েছে। পিরতলা, জলিশার কুন্ডমালা, আংগারিয়ার রুপাশিয়া ভাড়ানী, লেবুখালীর কচ্ছপিয়া, ফেদিয়া, গোদার খাল, কোহার-জোড়, ডাকাতিয়া, বয়ড়ার খাল, মুরাদিয়ার ঝড়ঝড়িয়াতলা, মহেশখালীসহ উল্লেখযোগ্য খালগুলি এখন ভরাট হয়ে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। এসব খাল পৌষ মাসের শুরুতেই শুকিয়ে গেছে।  ফলে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের প্রায় সর্বত্রই সেচের পানির মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছে। শুধুমাত্র সেচের পানির অভাবেই প্রতিটি মৌসুমে ফসলের আবাদ নিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষকদের দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। চলতি বোরো আবাদের মৌসুম শুরুতে বীজতলা তৈরী করতে না পারা ও প্রয়োজনীয় বীজবপনে ব্যর্থতার কারনে ইরি-বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা মারাত্মক ভাবে বিঘিœত হওয়ার আশংকা রয়েছে। এতে কৃষিবিভাগের দেয়া ইরি-বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রায় চরম বিপর্যয়ের আশংকা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে দুমকি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মেহের মালিকা সেচ সুবিধা না থাকায় বোরোর আবাদ বিঘেœর সত্যতা স্বীকার করে বলেন নদীর তীরবর্তি আলগি, চরগরবদি ও লেবুখালী চরাঞ্চলের কৃষকরা নিজস্ব উদ্যেগে কিছু কিছু জমিতে বোরোর আবাদ করছেন বলে জানান। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দুলাল চন্দ্র দাস জানান, সেচ সংকটের কারনে বোরোর আবাদ করতে না পারা কৃষকরা বিকল্প হিসেবে মুগ, মশুরীসহ রবি শস্য চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেছেন।

এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১২:২৪:৫৫ ● ৪৭৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ