টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় অগ্নিকান্ডের পর ৬টি পরিবারের ৫০ সদস্য দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অগ্নিকান্ডের শিকার পরিবারগুলো সর্বশান্ত হয়ে গেছে। তাদের গায়ের কাপড় ছাড়া সহায় সম্বল সবকিছু আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে। প্রতিবেশী ও স্বজনদের কাছ থেকে ধার করে ৬ পরিবারের সদস্যরা কাপড় পরিধান করছেন। তাদের অবস্থা খুবই শোচনীয় আকার ধারণ করায় গ্রামবাসী তাদের খাবার ও থাকার ব্যবস্থা করছেন। তাই অসহায়ভাবে জীবন যাপন করছে পরিবারগুলো। টুঙ্গিপাড়া উপজেলার তারাইল গ্রামের ৬টি পরিবার এমন দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।
বিগত ১০ ফেব্রুয়ারী এ পরিবারগুলো অগ্নিকান্ডের শিকার হয়ে সর্বস্ব হারায়। ক্ষতিগ্রস্থরা হলেন ওই গ্রামের সন্তোষ কুমার মন্ডল, প্রভাষ বৈদ্য, গোসাই লাল বিশ্বাস, প্রেমানন্দ অধিকারী, রফিকুল শিকদার ও হান্নান শেখ।
অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ সন্তোষ কুমার মন্ডল বলেন, এই শীতে আমরা কোন রকমে প্রতিবেশীদের বাড়ির উঠানে ও বারান্দায় আশ্রয় নিয়েছি। আমাদের সুস্থ পুরুষ ও মহিলারা কোনভাবে দিন রাত কাটিয়ে দিলেও শিশু, বয়স্ক ও রোগাক্রান্ত ব্যক্তিরা পড়েছে বিপাকে। পরনের কাপড় ছাড়া একটি জিনিস নিয়েও বের হতে পারিনি। সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখন কোথায় যাবো ? কি করবো? ভেবে পাচ্ছিনা। দিশেহারা হয়ে পড়েছি। তাই সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করছি।
ক্ষতিগ্রস্থ প্রভাষ বিশ্বাসের স্ত্রী মলিনা বৈদ্য কাদতে কাদতে জানান, তার মেয়েটার বয়স মাত্র ৩ বছর। যখন আগুন চারিদিকে ছড়িয়ে পরে তখন তার মেয়েটি ঘরে ঘুমানো ছিল। তিনি সময়মতো না আসলে মেয়েটাও বিভৎস আগুনে পুড়ে যেত।
স্থানীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক সন্তোষ কুমার মন্ডল বলেন, পরিবার নিয়ে খুবই কষ্টে দিন গুলো পার করছি। অনেকে কাপড়, চাল, ডাল দিলেও মাথা গোজার ঠাই টুকু পাচ্ছিনা। তাই প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি ও সহযোগিতা কামনা করছি।
হান্নান শেখ বলেন, খাবার না জুটলেও এখন সবচেয়ে প্রয়োজন মাথার উপর চাল। প্রতিদিনের খাবার কোনভাবে সংগ্রহ হলেও ঘর করার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন তা এই মূহুর্তে জোগার করা সম্ভব হচ্ছেনা। তাই সরকারী বা বেসরকারী সহযোগিতা না পেলে জীবন যাপন করাই দুরুহ হয়ে পরবে।
টুঙ্গিপাড়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার সরদার শরিফুল ইসলাম জানান, গত (১০ ফেব্রুয়ারী) সোমবার সকালে অগ্নিকান্ডে ৬টি পরিবারের নগদ টাকা, ঘর, আসবাবপত্র, মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে ঐ পরিবার গুলোর প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাকিব হাসান তরফদার বলেন, পরিবার গুলো খুবই অসহায়ভাবে জীবন যাপন করছে শুনেছি। তাই তাদের সহায়তা করার জন্য উপজেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে উদ্যেগ নিয়েছে।
এসএস/এমআর