কলাপাড়ায় মনির হত্যা মামলা পুনরুজ্জীবিত করার দাবি

প্রথম পাতা » বিবিধ » কলাপাড়ায় মনির হত্যা মামলা পুনরুজ্জীবিত করার দাবি
শনিবার ● ১ ফেব্রুয়ারী ২০২০


কলাপাড়ায় মনির হত্যা মামলা পুনরুজ্জীবিত করার দাবি

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥

মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মনির (১৮) হত্যারহস্য ২০ বছরেও উদঘাটিত হয়নি। নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি ২০০২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে পটুয়াখালীর ডিবি পুলিশ চুড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে। মামলাটি মূলতবি করা হয়। এরপর মনিরের পরিবার থেকে এ নিয়ে কেউ আর ঘাটাঘাটি করেনি। প্রভাবশালী মহল আর পুলিশের (ডিবি) ভূমিকায় পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা নিরাপত্তার কথা ভেবে চুপসে গেছেন বলে স্থানীয়দের অভিমত। হত্যারহস্য উদঘাটনে পুলিশের এখন কোন ভূমিকা নেই।
২০০০ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি রাত আনুমানিক আটটার সময় আলীপুর মৎসবন্দর থেকে মনিরকে ডেকে নেয় একটি চক্র। পরদিন বিকেলে আলীপুর বাজারের পুর্বদিকে বিলে তার ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মুগুর দিয়ে পিটিয়ে মনিরের মুখমন্ডল থেতলে দেয়া হয়। চোখ বের হয়ে যায়। পুলিশের এসআই মাসুদ লাশটি উদ্ধার করেছিল। লাশ উদ্ধারের সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুই ফুট লম্বা একটি কাঠের মুগুর, মনিরের একটি দাঁত, রক্তমাখা মাটি উদ্ধার করে। তখন ১৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের হয়। পুলিশ পর্যায়ক্রমে সাত আসামিকে গ্রেফতার করে। এমনকি দুই আসামির কাছ থেকে রক্তমাখা পাঁচ শ’ ও এক শ’ টাকার কয়েকখানা নোট উদ্ধার করে।
মনির আলীপুরে পানের দোকান দিত। এ জঘন্যতম হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে আলীপুর-মহিপুর ও কুয়াকাটায় বিক্ষোভ হয়। সাতদিন সকল দোকানপাটে কালো পতাকা উত্তোলন করেন এলাকাবাসী। এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বদল হয়েছে নয় জন। সবশেষ চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ডিবি পুলিশের তৎকালীন এসআই মোসলেহ উদ্দিন। তিনি প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, খুনের ঘটনা সত্য। পুলিশি কৌশলে হত্যারহস্য উদঘাটন করা যায়নি। ভবিষ্যতে উদঘাটনের সম্ভাবনা কম থাকায় মামলাটি মূলতবি রয়েছে।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, পুলিশ শুধু মনিরের হত্যাকান্ডের ঘটনা ধামাচাপা দিতেই ছিল সচেষ্ট। এক এক করে নয় জন তদন্ত কর্মকর্তা বদল হয়েছে। কেউ তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন নি ওই রাতে যেখানে মনিরের লাশ পাওয়া যায় তার পাশের একটি ঝুপড়ি ঘরে পিকনিক চলছিল। কারা পিকনিক করছিল, তাদের কেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। সংসারের যোগান দেয়া সন্তান খুন হওয়ার পরে বার্ধক্যের ভারে আরও ন্যুয়ে পড়েন বাবা ছত্তার মুন্সি। ছেলের বিচার না পেয়ে কিংবা খুনিদের গ্রেফতার তো দুরের কথা শণাক্ত না হওয়ায় ধুঁকে ধুঁকে ইহকাল ছেড়েছেন। মনিরের বৃদ্ধা মা লাইলি বেগমও সন্তানের খুনিদের বিচার না দেখে দুনিয়া ছেড়েছেন। কেউ আর ঘাটেনি মনির হতারহস্য। মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুল্লাহ রানা ফের এ হত্যাকান্ডের নতুন করে তদন্তের দাবি করেছেন।

এমইউএম/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২২:৫২:০৩ ● ৩৪৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ