আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বরগুনার তালতলী থানার পুলিশ সদস্য মোঃ জাকির হোসেনকে যান্ত্রিক যান থ্রিহুইলার সমিতির লাইনম্যান মোঃ আবু সালেহ মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত পুলিশ সদস্যকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে আমতলী-কুয়াকাটা সড়কের হাসপাতাল এলাকার মাহেন্দ্র ষ্ট্যান্ডে। এ ঘটনায় আমতলীতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী লাইনম্যান আবু সালের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন।
জানাগেছে, তালতলী থানার পুলিশ সদস্য মোঃ জাকির হোসেন শনিবার সকালে থানার ডাক নিয়ে আমতলী উপজেলা সিনিয়ির জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসেন। ওই দিন বিকেলে কাজ শেষে তালতলীতে ফেরার জন্য আমতলী-কুয়াকাটা সড়কের আমতলী হাসপাতাল সংলগ্ন মাহেন্দ্র স্ট্যান্ড থেকে মাহেন্দ্র গাড়ীতে উঠেন। ওই গাড়ীর চালকের পিছনে চারজন যাত্রীর সিট রয়েছে। ওই সিট পুরন হলেও যান্ত্রিকযান থ্রি-হুইলার সমিতির লাইনম্যান মোঃ আবু সালেহ ওই গাড়ীর চারজনের সিটে আরো একজন যাত্রী তুলে দিতে চেষ্টা করে। এ সময় সিভিল পোষাকে থাকা পুলিশ সদস্য জাকির হোসেন বেশী যাত্রী উঠনোর প্রতিবাদ করে। পুলিশ সদস্য লাইনম্যান আবু সালের এ নৈরাজ্যের প্রতিবাদ করায় ক্ষিপ্ত হয় সে। এক পর্যায় আবু সালেহ তার সহযোগীদের নিয়ে পুলিশ সদস্য জাকির হোসেনকে বেধরক মারধর করেন। পুলিশ পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরেও তিনি ক্ষ্যান্ত হয়নি। পরে স্থানীয় লোকজন পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় আমতলীতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী লাইনম্যান আবু সালেহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করেছেন। খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (আমতলী-তালতলী সার্কেল) সৈয়দ রবিউল ইসলাম ও আমতলী থানার ওসি মোঃ আবুল বাশার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ঘটনার পরপরই লাইনম্যান আবু সালেহ এলাকা থেকে পালিয়েছে। এদিকে লাইনম্যান আবু সালেহকে রক্ষায় একটি মহল উঠেপরে লেগেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, যাত্রী বেশী উঠানোর প্রতিবাদ করলেই লাইনম্যান আবু সালেহ পুলিশ সদস্য জাকির হোসেনকে মারধর শুরু করে। পুলিশ পরিচয় দেয়ার পরও তিনি ক্ষ্যান্ত হয়নি। তারা আরো বলেন, লাইনম্যান আবু সালেহ ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরেই যাত্রীদের সাথে খারাপ আচরনসহ বিভিন্ন নৈরাজ্য করে আসছে। তারা মাহেন্দ্র গাড়ী চালক, লাইনম্যান ও সংশ্লিষ্টদের নৈরাজ্য থেকে রক্ষায় পুলিশ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
পুলিশ সদস্য জাকির হোসেন বলেন,আমি তালতলীতে যাওয়ার জন্য একটি মাহেন্দ্র গাড়ীতে উঠে বসি। ওই গাড়ীর চালকের পিছনে চারজন যাত্রী বসার সিট রয়েছে। লাইনম্যান আবু সালেহ ওই চারজনের সিটে পাঁচজন যাত্রী বসানোর চেষ্টা করে। আমি এর প্রতিবাদ করলেই আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। আমি আমার পরিচয় দেওয়ার পরই তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে তার লোকজন নিয়ে আমাকে বেধরক মারধর করে।
লাইনম্যান আবু সালেহর সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার গৌরাঙ্গ হাজড়া বলেন, পুলিশ সদস্য জাকির হোসেনের মুখমন্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহৃ রয়েছে।
বরগুনা জেলা যান্ত্রিকযান থ্রিহুইলার শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি মোঃ জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনার পরপরই আবু সালেহ পালিয়েছে। তাকে আটক করে থানায় সোপর্দ করা হবে।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আবুল বাশার বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ সদস্য জাকির হোসেনকে উদ্ধার করে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে আইননানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এমএইচকে/এমআর