কাজী সাঈদ, কুযাকাটা (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥
পর্যটন মৌসুমের শুরুতেই সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটা সৈকত এখন বস্তিবাসীর দখলে চলে যাচ্ছে। সাদা বালুর চরে যত্রতত্র অসংখ্য নতুন ঝুপড়ি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। দুই মাস অতিবাহিত হলেও অপসারণ করা হয়নি ঘরগুলো। ফলে শ্রীহীন হয়ে পরেছে ভ্রমণ পিপসুদের আকর্ষণীয় সমুদ্র সৈকতটি। ময়লা আর্বজনায় নাকাল গোটা সৈকত দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করছে বেড়াতে আসা পর্যটকরা।
সরেজমিনে জানাগেছে, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ রক্ষায় ৪৮নং পোল্ডারে বেড়িবাঁধ সংস্কারে করার জন্য বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে চীনা সিআইসও কোম্পানী কাজ করছে। ফলে বেড়িবাঁধে বসবাসকারীদের ক্ষতিপূরণ নিয়ে স্থাপনরা অপসারণ করা হয়েছে। যার ফলে রাস্তার উপরে থাকা ছোট ছোট ঘরগুলো সাদা বালুর চরে গিয়ে আবার ঘর নির্মাণ করে বসবাস শুরু করেছে। এ বিষয়ে কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র কাউন্সিলররা নিষেধ করা স্বত্ত্বেও প্রায় ২ শতাধীক পরিবার সৈকতে ঘর তুলে বসবাস শুরু করেছে। পর্যটন মৌসুমের এমন নোংরা পরিবেশ দেখে পর্যটকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দ্রুত এ ঝুপড়ি ঘর অপসারণ না করলে কুয়াকাটা থেকে পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে এমন আশংকা করেছেন ট্যুরিজম ব্যবসায়ীরা।
কুয়াকাটা চৌরাস্তা থেকে পশ্চিম দিকে বেড়িবাঁধের উপরে থাকা প্রায় দুই শতাধীক ছোট ছোট ঘর ভেঙ্গে নিয়ে রাতের আধারে সৈকতে নির্মাণ করেছে। চীনা কোম্পানী ওই বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য গত বছর কাজ শুরু করে। ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েও অনেক জেলে পরিবার সাগরে মাছ ধরার অজুহাতে বাধা নিষেধ উপেক্ষা করে সৈকতে বসবাস করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে একাধিকবার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। ভূমি প্রশাসনের নজরদারী না থাকায় ওই ঘরগুলি নির্মাণ করছে স্থানীয় জেলেরা।
ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক তাসমিয়া ফারজানা এ প্রতিনিধিকে বলেন, কুয়াকাটার নাম শুনছি অনেক আগে। জায়গাটা নাকি অনেক সুন্দর। তাই দেখতে আসলাম। সৈকতে নেমেই যা দেখছি তা আশা করি নি। নোংরা পরিবেশ আর সাগর পাড়ে বস্তির মত ঘরবাড়ী, ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা জেলেদের নৌকা, জাল থেকে দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এসব দেখতে দেশী বিদেশী পর্যটক আসবে না।
কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট এ্যাসোসিয়েশন (কুটুম)’র সভাপতি নাসির উদ্দিন বিপ্লব অভিযোগ করে বলেন, সৈকতের এমন অব্যবস্থাপনা ঝুপড়ি ঘরবাড়ী নোংরা পরিবেশ এসব সী-বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির অদক্ষতার কারণে আমাদের দেখতে হয়। বিশ্বর কোন সৈকতে এই পরিবেশ নেই। পর্যটকদের সুবিধার জন্য সুন্দর পরিবেশ করার জন্য এসব দ্রুত অপসারণ করা দরকার।
কুয়াকাটা প্রেসক্লাব সভাপতি এ.এম.মিজানুর রহমান বুলেট বলেন, এসব দেখে মনে হচ্ছে কুয়াকাটায় পর্যটন বান্ধব জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের অভাব রয়েছে। তাদের দায়িত্বহীনতার কারণে বার বার শ্রীহীন হয় সৈকতটি। বীচ-ম্যানেজমেন্ট কমিটির কর্তাব্যক্তিরা মুখে সুন্দর সুন্দর কথা বললেও কাজের কাজ কিছুই করছেন না।
এ বিষয়ে কথা হয় কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অনুপ দাস’র সাথে। তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন, আমি সরেজমিনে পরিদর্র্শন করে ঘরগুলো অপসারণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এ ব্যাপারে কুয়াকাটা বীচ-ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান বলেন, সৈকতের সাদা বালুতে কারো বসবাস করার সুযোগ নেই। সৈকতের ঝুপড়ি ঘরগুলো খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে অপসারণ করা হবে।
কেএস/এমআর