টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জম্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ১ শ’ দেশ বরেণ্য চিত্র শিল্পী ১ শ’ ফিট ক্যান্ভাসে বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে ছবি এঁকেছেন।
রবিবার (১ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধের পাবলিক প্লাজায় তারা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আতœজীবনী ও কারগারের রোচনামচা থেকে এসব ছবি আঁকেন। ক্যান্ভাসে ১৯৬৯, ১৯৭০, ১৯৭১ ও ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে দিন ব্যাপী তুলি ও রং এর আঁচরে ছবি আকা হয়।
চিত্রশিল্পী জামাল উদ্দিন আহমেদ, আব্দুল মান্নান, জাহিদ মোস্তফা, আফরোজা জামিল কংকা, কীরিটী রঞ্জন বিশ্বাস, দুলাল চন্দ্র গাইন, নাসিম আহমেদ নাদভী, সনজিব দাস অপু, শহীদ কবির, নাজমা আক্তার, কামাল পাশা, আলম আনসারী সহ দেশের খ্যাতনামা ১ শ’ চিত্র শিল্পী সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত রং তুলি আর মনের মাধুরী মিশিয়ে প্রিয় নেতার ছবি আকেন। তারা তাদের সামর্থ উজার করে ক্যানভাসকে জীবন্ত করে তোলেন। প্রিয় নেতার সময়ের ১৯৬৯, ১৯৭০, ১৯৭১ ও ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালকে বিভিন্ন পর্বে ভাগ করে তারা চিত্রকর্ম সম্পন্ন করেন।
এর আগে শিল্পকলা একাডেমির মহা-পরিচালক লিায়াকত আলী লাকীর নেতৃত্বে টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধের বেদীতে ফুল দিয়ে চিত্র শিল্পীরা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। পরে তারা বঙ্গবন্ধুর রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া মোনাজাত করেন। এ সময় গোপালগঞ্জে জেলা কালচারাল অফিসার আল মামুন বিন সালেহ উপস্থিত ছিলেন।
১শ’চিত্রশিল্পীর কো-অর্ডিনেটর চিত্রশিল্পী জামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর রচিত দুটি বই অসমাপ্ত আতœজীবনী ও কারগারের রোচনামচা থেকে ছবি এঁকেছি। এ ছবি আগামী বছর ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিদেশে প্রদর্শন করা হবে। এ ছবি দেখেই দর্শনার্থীরা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আতœজীবনী ও কারগারের রোচনামচা বই পড়তে আগ্রহী হবেন। এ দুটি বই তিনি শেষ করেননি। কিন্তু আমরা ছবি এঁকে ওই দু’টি বইয়ের পরিসমাপ্তি ঘটাতে চেষ্টা করেছি।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা “প্রতিদিনের সংবাদকে” বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জম্ম শত বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রাক কাজের অংশ হিসেবে শিল্পকলা একাডেমী বঙ্গবন্ধুর ওপর বৃহৎ চিত্রকর্ম করছে। চিত্র শিল্পীরা বঙ্গবন্ধুর জীবন, কর্ম, আদর্শ, দর্শন ও ত্যাগ রং তুলির মধ্য দিয়ে ফুঁটিয়ে তুলেছেন। এটি আমরা আগামী প্রজম্মের কাছে তুলে ধরতে চাই। বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে তাদের জানান দিতে এ কর্ম অনেক বড় ভূমিকা রাখবে।
শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী বলেন, টুঙ্গিপাড়ায় সকল শিল্পী এসে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আতœজীবনী ও কারাগারের রোচনামচা নিয়ে ১শ’ চিত্র কর্ম নির্মাণ করেছে। বঙ্গবন্ধু বই দু’টিতে ১৯৬৮ পর্যন্ত শেষ করেছেন। বঙ্গবন্ধু সেখানে শেষ করেছেন, তারপরই ১৯৬৯, ১৯৭১ এবং ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালকে কয়টি পর্বে ভাগ করে আমরা ১ শ’ ফিট ক্যনভাসে এ শিল্পকর্ম নির্মিণ করেছি।
তিনি আরো বলেন, শিল্পকরা একাডেমি সাংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জাতির পিতার জম্ম শতবার্ষিকী জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি অনেক পরিকল্পনা গ্রহন করেছে। আমরা ২ বছর আগে থেকেই নানা পরিকল্পনা গ্রহন করেছি। এরমধ্যে বঙ্গবন্ধু কর্ণার করেছি। হাজারের বেশি বই সেখানে রয়েছে। কিভাবে বঙ্গবন্ধুর জম্ম শত বার্ষিকী পালন করা যায়, তা আমার শিশুদের মাধ্যমে জরিপ করছি। সারাদেশে বঙ্গবন্ধু পুস্প কানন করছি। শিল্পের আলোয় বঙ্গবন্ধুকে আমারা উপস্থাপন করছি। বঙ্গবন্ধুকে শত কোটি মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার চেতনা নিয়েই আমরা কাজ করছি। ২০৪১ সালে বঙ্গবন্ধুর সোনারবাংলা বিনির্মাণ ও বঙ্গবন্ধুকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পৌছে দেয়াই আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।
এসএস/এমআর