কলাপাড়ায় একই সময় দু’প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর অভিযোগ

প্রথম পাতা » বিবিধ » কলাপাড়ায় একই সময় দু’প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর অভিযোগ
শনিবার ● ৩০ নভেম্বর ২০১৯


কলাপাড়ায় একই সময় দু’প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর অভিযোগ

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সাগরকন্যা অফিস॥

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একই সময় চাকরি, সভাপতির স্বাক্ষর জালিয়াতি ও ভূয়া শিক্ষক নিয়োগসহ ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর ) সকাল ৯ টার সময় কলাপাড়া রিপোটার্স ক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলনে উপজেলার উত্তর হলদিবাড়িয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মোঃ নুরুজ্জামান লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০১৭ সনে মাদরাসার শিক্ষকদের হালনাগাদ তথ্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জমা দেয়ার কিছুদিন পর তিনি জানতে পারেন একটি জালিয়াতি চক্র উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ম্যানেজ করে তার জমাদানকৃত ফাইল থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রেখে প্রকৃত সকল শিক্ষকদের নাম বাদ দিয়ে এবং সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে উমিদপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসায় বর্তমানে কর্মরত শরীরচর্চা শিক্ষক মোঃ নুর সাঈদকে প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য ৪ জনকে সহকারী শিক্ষক দেখিয়ে ভূয়া কাগজ পত্র উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের মাধ্যম জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে প্রেরণ করা হয়েছে। বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করার জন্য কলাপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবরে আবেদন করা হলে তিনি অত্র উপজেলায় সদ্য যোগদানকৃত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শহীদ হোসেন এর উপর তদন্তভার দেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের তদন্ত প্রতিবেদন স্মারক নং ইউএসইও/কলা/ পটু/৫১/২০১৭/১৭১, তারিখ ১৯ সেপ্টেবর ২০১৭ এ সভাপতির স্বাক্ষর জাল প্রমানিত হয় এবং শিক্ষক নূর সাঈদ একই সময়ে ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত যা সরকারী বিধি লঙ্ঘন ও একই সাথে সভাপতির জাল স্বাক্ষর করে অত্র মাদরাসার  কাগজ পত্রাদি যা জেলা শিক্ষা অফিসে প্রেরণ করা হয়েছে সে গুলো বৈধ হয়নি বিধায় সেগুলো স্থগিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে অবহিত করা হয় মর্মে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন।  এরপরে অত্র মাদরাসার প্রকৃত শিক্ষকদের তথ্য পুনরায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে জমা দেয়া হয় যা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ২২ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে উমাশিঅ/কলা/পটু/১৮৬ নং স্মারকে জেলা শিক্ষা অফিসে প্রেরন করেন।
উল্লেখ্য মোঃ নুর সাঈদ উপজেলার উমিদপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসায় ২০০০ সনে শরীরচর্চা পদে যোগদান করে নিয়মিত হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে ইনডেক্স নং ৪৭১৪৬৫ এর মাধ্যমে সরকারী বেতন ও ভাতাদি উত্তোলনসহ সকল সুযোগ-সুবিদা ভোগ করে আসছেন বর্তমানেও কর্মরত আছেন অথচ ভূয়া কাগজপত্রে শিকষক মোঃ নূর সাঈদ ২০০৩ সনে উত্তর হলদিবাড়িয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসায় নিয়োগ ও যোগদান দেখিয়ে বর্তমানেও কর্মরত দেখানো হয়। একই সময়ে তিনি কিভাবে উত্তর হলদিবাড়িয়া স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসায় কর্মরত থাকতে পারনে? সংবাদ সম্মেলনে মোঃ নুরুজ্জামান বলেন তিনি যথারীতি মাদরাসার সকল দায়িত্ব পালন করে আসতেছেন অথচ কোন পরিদর্শন কিংবা তদন্ত আসলেই মোঃ নুর সাঈদ নিজেকে প্রধান শিক্ষক দাবী করেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জনকে সভাপতি বানিয়ে মনগড়া ব্যক্তিকে নিয়োগ দেখিয়ে থাকেন। মাদরাসার বর্তমান বৈধ কমিটি থাকা সত্ত্বেও সে কৌশলে অত্র মাদরাসার এন.টি.আর.সি এর পাসওয়ার্ড সংগ্রহ করে প্রকৃত তথ্য বাদ দিয়ে অনলাইনে সভাপতির ও প্রধান শিক্ষকের নাম পরিবর্তন করে এন্ট্রি দিয়ে আসছেন। তিনি বলেন মাদরাসা স্থাপিত হওয়ার পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত আলহাজ্ব মোসলেহ উদ্দিন আহম্মদ মাদরাসার সভাপতি বিদ্যমান আছেন এবং তিনি অত্র মাদরাসার দাতা ও প্রতিষ্ঠাতা। বর্তমানে এমপিওর জন্য শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের প্রাথমিক তালিকায় অত্র মাদরাসার নাম থাকায় সরেজমিনে তদন্ত প্রক্রিয়াধীন আছে। ভূয়া প্রধান শিক্ষক নুর সাইদ বিষয়টি জানতে পেরে কুচক্রি মহলের সহায়তায় জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে পুনরায় ভূয়া শিক্ষকদের তথ্য তদন্তকমিটির নিকট উপস্থাপনের পায়তারায় লিপ্ত আছে যা মাদরাসার অপূরনীয় ক্ষতির কারন হয়ে দাড়িয়েছে। বর্ণিত ষড়যন্ত্র থেকে পরিত্রাণ এবং মোঃ নুর সাঈদসহ জালিয়াতিচক্রকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি মূলক ব্যবস্থার জন্য উর্দ্ধতন কর্র্তৃপক্ষের বরাবরে আবেদন করা হয়েছে বলেও তিনি সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন।
এ সময়ে মোঃ নুরুজ্জামানের সাথে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাদরাসার সভাপতি, দাতা ও প্রতিষ্ঠাতা মোঃ মোসলেহ উদ্দিন আহম্মদের ছেলে মোঃ নিজাম উদ্দিন, স্থানীয় গন্যমান্য মোঃ মাসুম সরদার, মোঃ কবির হোসেন, মোঃ এমদাদুল হক প্রমুখ।
এ ব্যাপারে শিক্ষক মো: নুর সাঈদ বলেন, ২০০৩ সালে আমি কিছু দিন স্বাক্ষর দিয়েছি যখন আমি জানতে পারি যে ২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এক সাথে চাকরি করা যায় না। তখন থেকে আমি আর স্বাক্ষর দেইনি।আমি কোন জালজালিয়াতি করিনাই।

এসকে/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১২:১৫:২৯ ● ৬৫২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ