আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
বাংলাদেশ নৌ-যান ফেডারেশনের আহবানে ১১ দফা দাবীতে সারা দেশের ন্যায় আমতলীতেও চলছে নৌ-যান শ্রমিকদের কর্মবিরতি ।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) আমতলী লঞ্চঘাট থেকে কোন লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়নি। এতে দূর্ভোগে পরেছে আমতলী-তালতলী-কলাপাড়া উপজেলা ও পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সহস্রাধিক ঢাকামুখী যাত্রী। নিরুপায় হয়ে যাত্রীরা সড়কপথে পরিবহনে ঢাকা যাচ্ছেন। তাতেও পরেছে তারা চরম দূর্ভোগে। অনেক যাত্রীরা ঢাকা না গিয়ে বাড়ী ফিরে গেছেন।
প্রিন্স অব হাসান-হোসেন-১ লঞ্চের ইনচার্জ মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ২০১৬ সালে নৌ-যান শ্রমিকদের জন্য একটি গেজেট পাশ হয়েছে। ওই গেজেট অনুসারে কাউকে বেতন দেওয়া হচ্ছে না। মালিক পক্ষ যে বেতন দিচ্ছেন তা দিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতন জীবন যাপন করতে হয়। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তিন দফা কর্মবিরতি দিয়েও দাবী বাস্তবায়ন হয়নি। যতদিন পর্যন্ত মালিক পক্ষ আমাদের দাবী না মেনে নিবেন ততদিন পর্যন্ত আমাদের কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।
জানাগেছে, নৌ-পথে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজী, শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ, নৌ-যান শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও কর্মস্থলে দূর্ঘটনায় মৃত নৌ-শ্রমিক পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণসহ ১১ দফা দাবী করে আসছিল বাংলাদেশ নৌ-যান শ্রমিক ফেডারেশন। মালিকপক্ষ এ দাবী দীর্ঘদিন ধরে মেনে নেয়নি। এ ১১ দফা দাবী আদায়ের লক্ষে ২৯ নভেম্বর রাত থেকে নৌ-যান শ্রমিকরা লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেছে। শনিবার আমতলী লঞ্চঘাট থেকে কোন লঞ্চ ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়নি। ঢাকার উদ্দেশ্যে লঞ্চ না ছাড়ায় চরম দূর্ভোগে পরেছে আমতলী-তালতলী-কলাপাড়া উপজেলা ও পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সহস্রাধিক যাত্রী। অনেক যাত্রী আমতলী লঞ্চঘাট এসে লঞ্চ না ছাড়ার কারনে বাড়ী ফিরে গেছেন।
শনিবার বিকেলে চারটায় আমতলী লঞ্চঘাট ঘুরে দেখাগেছে, টার্মিনালে প্রিন্স অব হাসান-হোসেন-১ লঞ্চ নোঙ্গর করে আছে। যাত্রীরা ঘাটে এসে লঞ্চ না ছাড়ার খবর পেয়ে হতাশ হয়ে বিকল্প পথে ঢাকায় যাচ্ছেন। আবার অনেকে বাড়ী ফিরে গেছেন।
তালতলী থেকে আসা যাত্রী সফিক মিয়া বলেন, ঢাকা যাওয়ার জন্য আমতলী লঞ্চঘাটে এসেছিলাম কিন্তু লঞ্চ ছাড়বে না তাই বিকল্প পথে ঢাকা যাওয়ার চিন্তা করছি। যাত্রী গোলাম মোস্তফা বলেন, লঞ্চ ছাড়বে না তাই ঢাকা যাওয়া হবে না। এখন বাড়ী ফিরে যাচ্ছি।
প্রিন্স অব হাসান-হোসেন-১ লঞ্চ মালিক মোঃ হাফিজুর রহমান বলেন, ২০১৬ সালে সরকার, মালিক পক্ষ ও শ্রমিক নেতাদের সাথে একটি চুক্তি হয়েছে। ওই চুক্তি অনুসারে ২০২২ সালের আগে শ্রমিকরা কোন দাবী দাওয়া করতে পারবে না। এখন তারা যা করছে তা অযৌক্তিক। একটি পক্ষ শ্রমিকদের ইন্ধন দিয়ে ছয় মাস পরপর কর্মবিরতি দিচ্ছে। যারা দিচ্ছে তারা শ্রমিক না।
এমএইচকে/এমআর