মানবতার ফেরিওয়ালা আমতলীতে ১৬ বছরে ৪৮ হাজার মানুষের ফ্রি চিকিৎসা!

প্রথম পাতা » বরগুনা » মানবতার ফেরিওয়ালা আমতলীতে ১৬ বছরে ৪৮ হাজার মানুষের ফ্রি চিকিৎসা!
বৃহস্পতিবার ● ২৮ নভেম্বর ২০১৯


---

মোঃ জসিম উদ্দিন সিকদার, আমতলী (বরগুনা) থেকে॥
আমতলীর মানবতার ফেরিওয়ালা ডাক্তার মোঃ আবু জাফর। চিকিৎসা জগতে পা দিয়েই নিজের জীবনটা বিলিয়ে দিয়েছেন মানব সেবায়। আমতলীতে গরীবের ডাক্তার নামে পরিচিত তিনি। গত ১৬ বছরে ৪৮ হাজার মানুষের ফ্রি চিকিৎসা দিয়েছেন। এখনও অব্যাহত রেখেছেন তার মানবতার কাজ। একজন ভালো চিকিৎসক হিসেবে রয়েছে তার সুনাম।
নাম আবু জাফর। একজন গরীবের ডাক্তার। সময় পেলেই ছুটে আসেন নিজ উপজেলা আমতলীর বিভিন্ন আনাচে কানাচে। চিকিৎসা দেন বিনা পয়সায়। সাদামাঠা এ মানুষটি রোগীদের কথা শোনেন মনোযোগ সহকারে। আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের এক সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে তার জন্ম। বাবা আলহাজ্ব সামসুদ্দিন আহম্মেদ ছজু। কুকুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চার বার নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি স্বর্নপদকপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। পটুয়াখালী জুবলি স্কুল থেকে আবু জাফরের শিক্ষা জীবন শুরু হয়। ১৯৯১ সালে ওই স্কুল থেকে কৃতিত্বের সাথে এসএসসি পাশ করেন। ১৯৯৩ সালে ঢাকা নটরডেম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ২০০৩ সালে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন। এমবিবিএস পাশ করেই শুরু করেন মানব সেবা। প্রথমেই নিজ উপজেলা আমতলীর মহিষকাটা বাজারে ফ্রি চিকিৎসা সেবা দেন। এরপরে আমড়াগাছিয়া বাজার  ও বর্তমানে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে আমতলী ডায়াগনিষ্টিক সেন্টারে ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। উপজেলার প্রায় ১০ টি স্থানে তিনি ফ্রি চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রেখেছেন। গত ১৬ বছরে ৪৮ হাজার মানুষকে ফ্রি চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন ডাক্তার আবু জাফর। যখনই সময় পান তখনই তিনি ছুটে আসেন আমতলীতে। প্রতি বছর তিনি আমতলীর মহিষকাটা, সাহেববাড়ী, আমতলী সদর চেম্বারে ফ্রি তিন হাজার রোগী দেখেন। তিনি আমতলী বাসীর কাছে মানবতার ফেরিওয়ালা ও গরীবের ডাক্তার নামে পরিচিত। বর্তমানে বরিশাল এ্যাডভোকেট হেমায়েত উদ্দিন ডায়াবেটিকস এন্ড জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসেবে কাজ করছেন তিনি।
ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। ২০০০ সালে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে সাংস্কৃতিক সম্পাদক হন। ২০০১ সালে ওই কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হয়। চিকিৎসক হওয়ার পরে তিনি বিএমএ বরিশাল শাখার দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে বরিশাল প্রাইভেট প্রাকটিশনা এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও বিএমএ’র কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য। এছাড়া তিনি বরিশাল এ্যাডভোকেট হেমায়েত উদ্দিন ডায়াবেটিকস এন্ড জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতি করে আসলেও তার রাজনীতিতে আসার আগ্রহ নেই। মানব সেবাই তার মুল ব্রত। যতদিন বেঁচে আছেন ততদিন দিন মানুষের সেবা করে যাবেন।
ডাক্তার আবু জাফর সাগরকন্যাকে বলেন, চিকিৎসক হওয়ার পরেই আমি প্রথম যে রোগীর চিকিৎসা দিয়েছি তা আমার এলাকার। প্রতিমাসে  দুই’শ পঞ্চাশ জন ফ্রি রোগী দেখি। বছরে তিন হাজার রোগীর চিকিৎসা দেই। এভাবে মানুষের চিকিৎসা দিতে না পারলে আমি মানসিকভাবে সুস্থ থাকি না। গত ১৬ বছর ধরে এভাবেই বিনা পয়সার চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি। মানুষের সেবা করেই আমি আত্মতৃপ্তি পাই। মানবসেবা যেন আমার জীবনের একটি বড় অংশে পরিনত হয়েছে। যতিদিন বেঁচে আছি, আমি মানুষের সেবা করে যাব।

বাংলাদেশ সময়: ১৭:০০:৫৭ ● ৪৬৯ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ