বশেমুরবিপ্রবি সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) এক শিক্ষার্থী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের ২য় বর্ষে পড়ুয়া ওই শিক্ষার্থীর শিক্ষার্থীর নাম আবদুল্লাহ আল নোমান। বুধবার রাত ১১টায় সোনাকুড়ের মেস থেকে নোমানের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করা হয়।
মেসে অবস্থানরত অন্যান্য শিক্ষার্থীরা জানান, রাত ১০টার দিকে তারা নোমানের রুম থেকে পানি বের হতে দেখলে দরজা ভেঙে রুমে প্রবেশ করে। পরে তাকে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় দেখতে পায়। তাৎক্ষণিকভাবে তারা বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা এবং অন্য শিক্ষকরা পুলিশসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নোমানের মৃতদেহ উদ্ধার করেন।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রাজিউর রহমান বলেন, ঘটনাটি শুনে আমি ঘটনাস্থলে যাই। ছেলেটির পরিবারকে জানানো হয়েছে।
এদিকে নোমানের রুম থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে; যেখানে তিনি লিখেছেন, তার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নন। যদিও সুইসাইড নোটটি প্রকাশ করা হয়নি। তবে নাম প্রকাশ না করা শর্তে মেসের এক ছাত্র জানিয়েছেন, ‘সুইসাইড নোটে লিখেছে ওর মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়, ওর একটা অসুখ রয়েছে যেটা সহ্য করতে না পেরে সুইসাইড করেছে। ওর মায়ের কাছে ক্ষমা চেয়েছে, ছোট বোনের দিকে খেয়াল রাখতে বলেছে। বন্ধুদের অনুরোধ করেছে, ওর ড্রেসগুলো যেনো কুরিয়ার করে পাঠিয়ে দেয়; আর মালামালগুলো যেনো বিক্রি করে দেয়।’
নোমানের বন্ধুরা জানান, নোমান মানসিকভাবে কিছুটা অসুস্থ ছিল। বেশ কয়েকবার চিকিৎসাও করানো হয়। তবে আজ তার আচরণ স্বাভাবিক ছিল। আজকেও মেসের বাজার করেছে। নামাজ পড়েছে।
উল্লেখ্য, নোমানের বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায়। প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিলেন তিনি।
এদিকে নোমানের মৃত্যুতে ক্যাম্পাসে শোকের ছায়া নেমেছে এসেছে। ফেসবুকে মোজাম্মেল হক নাইম নামে এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। যখন ওর সাথে প্রথম পরিচয় হয় ও তখন ক্লাস সিক্সে; সাময়িক পরীক্ষার সময় একই টেবিলে বসে পরীক্ষা দিচ্ছিলাম। তখন একটা জিনিস খেয়াল করেছিলাম, ওর মাথায় সবসময় টুপি পড়া থাকতো। তার স্বভাব চরিত্র ছিল অসাধারণ। এই খবরটা যেন আমার কেমন জানি ষড়যন্ত্র মনে হচ্ছে! যদি আত্মহত্যা হয়ে থাকে, তাহলে তার জন্য কষ্ট হবে না; কারণ আত্মহত্যা মহাপাপ জীবন।’
রিমন লিখেছেন, ‘দোস্ত আমি কি বলবো আমি নিজেও জানিনা; আমি নিজেকেই বিশ্বাস করতে পারছি না যে তুই আদৌ এই কাজ করতে পারবি। কেন এই কাজ করতে গেলি ভাই? আমার লাইফে তোর মতো ভালো মানুষ কমই দেখেছি।। ভাই আমাদের মাফ করে দিস… কেনো বন্ধু হয়েও তোর ডিপ্রেশনের কারন জানতে পারিনি, যেটা শেষ পর্যন্ত তোর মৃত্যুর কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। ওপারে ভালো থাকিস ভাই।