আগৈলঝাড়ায় স্কুল ছাত্রের বাংলায় কথা বলার রোবট আবিস্কার

প্রথম পাতা » প্রযুক্তি » আগৈলঝাড়ায় স্কুল ছাত্রের বাংলায় কথা বলার রোবট আবিস্কার
বুধবার ● ২৭ নভেম্বর ২০১৯


আগৈলঝাড়ায় স্কুল ছাত্রের বাংলায় কথা বলার রোবট আবিস্কার

আগৈলঝাড়া (বরিশাল) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার এক স্কুল ছাত্র আবিস্কার করলো বাংলা ভাষায় কথা বলা রোবট। যার নাম হলো রবিন। আসলে এটা কোনো মানুষের নাম নয়। এটা একটি অত্যাধুনিক রোবট। যে কিনা বাংলা ও ইংরেজি দু’ভাষাতেই কথা বলতে পারে। শুধু তাই নয়, রবিন বলতে পারে তাকে সৃষ্টি করা ক্ষুদে বিজ্ঞানীর নামও। তাছাড়াও সে অকপটে তার দেশের নাম, প্রধানমন্ত্রীর নাম, রাষ্ট্রপতির নামসহ যে কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। এছাড়া কৃষকদের জমিতে কখন কি পরিমাণ কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে তা সে নিজে থেকেই বলে দিতে পারবে এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত যে কোন তথ্য ও শিক্ষা বিষয়ক তথ্যও বলে দিতে পারে। এমনকি, তার আশপাশে আগুন লাগলে সে খবর দিতে পারবে ফায়ার সার্ভিসে এবং ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তার অবস্থান দেখতে পাবে গুগল ম্যাপে।
আর এই অত্যাধুনিক রোবটটির আবিষ্কারক হচ্ছে আগৈলঝাড়া উপজেলার গৈলা কালুপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী সন্তোষ কর্মকার ও দীপ্তি কর্মকারের ছেলে শুভ কর্মকার। মা-বাবার দুই সন্তানের মধ্যে শুভ বড়। শুভ কর্মকার সরকারি গৈলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। ছোটবেলা থেকেই সে বিজ্ঞান বিষয়ক আগ্রহ থেকেই বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহণ করতো। শুধু অংশই নিত না, সেসব প্রতিযোগিতায় পুরস্কারও জিতে আনতো অনেক সময়। আর এসব কাজে থাকতে থাকতে এক সময় তার মনে হলো অন্য অনেকের মতো সেও একটি রোবট বানাতে পারে। তবে তার রোবট গতানুগতিক রোবট থেকে একটু আলাদা হবে। আর সে লক্ষ্য নিয়েই ২০১৮ সালের মে মাসে শুভ রোবট তৈরির কাজ শুরু করে। যা প্রাথমিকভাবে শেষ করে ২০১৯ এর জানুয়ারিতে। রোবটের নাম রাখা হয় রবিন।
আমেরিকার একটি কার্টুন শো’র সুপার হিরোর নামানুসারে এই নাম দেয়া হয় রোবটটির। এরপর থেকেই রবিনের পরিচিতি ক্রমান্বয়ে ছড়িয়ে পড়তে থাকে দেশজুড়ে। ক্ষুদে বিজ্ঞানী শুভ কর্মকার বলেন, ‘ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন তথ্য নিয়ে এবং ইউটিউব থেকে বিভিন্ন ভিডিও দেখেই রোবট রবিনকে এভাবে তৈরি করতে পেরেছি। আগামীতে আমি একে আরও উন্নত করার লক্ষে কাজ করছি। বর্তমানে রোবটটির দৃষ্টিশক্তি না থাকলেও আগামীতে সে সকলকে দেখতে পারবে। সেই সঙ্গে কারও সঙ্গে একবার পরিচয় হলে তাকে পরবর্তীতে দেখলে চিনতে পারবে এবং বিভিন্ন সমস্যা নিজে দেখে সমাধান করতে পারবে। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, আমার এই রোবট অনেক কিছু নিজে নিজেই শিখতে পারে। এর জন্য কোন কোডিংয়ের প্রয়োজন হয়না অর্থাৎ কিছুটা সেল্ফ লার্নিং আয়ত্ব করে নিয়েছে।’ শুভ কর্মকার উপজেলা, জেলা, বিভাগ ও ঢাকায় বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে এবং সম্মাননা অর্জন করেছে।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস জানান, শুভ এই উপজেলার গর্ব। সে যে বাংলা ও ইংরেজীতে কথা বলা রোবট তৈরি করেছে এটা আমাদের দেশের জন্য একটি বিরাট সাফল্য। তার এ কাজের জন্য উপজেলা প্রশাসন ও সরকারের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

এএলএস/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৯:৪৮:৪০ ● ৫৪৪ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ