কাউখালী (পিরোজপুর)সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
পিরোজপুরের কাউখালীতে লবণের কেজি ‘দুইশ’ টাকা হবে এমন গুজবে লবণ কেনার হিড়িক পড়ে গেছে। গুজবের কারণে কাউখালী সদরের বিভিন্ন খুচরা ও পাইকারি দোকানের সব লবণ বিক্রি হয়ে গেছে। এ সময় ৭ হাজার টাকা জরিমানা ও চার জনকে আটক করেছে ভ্রাম্যমান আদালত।
পাইকারি ও খুচরা দোকানে লাইন দিয়ে খুচরা বিক্রেতা ও ক্রেতাদের লবণ ক্রয় করতে দেখা গেছে। মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কাউখালী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাজার মনিটরিংয়ে নামতে হয়েছে। বিকেলে কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. খালেদা খাতুন রেখা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় । গুজবে কান না দেওয়ার জন্য বিভিন্ন বাজারে পথসভা করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন এসময় কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)নজরুল ইসলামসহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা এবং ইউপি চেয়ারম্যানরা ।
এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কাউখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. খালেদা খাতুন রেখা অভিযান চালিয়ে তিন ব্যবসায়ীকে ৭ হাজার টাকা জরিমানা, বিভিন্ন স্থান থেকে ৪জনকে আটক এবং বিপুল পরিমান লবন জব্দ করে।
গত সোমবার দিবাগত রাত থেকে কাউখালী উপজেলায় লবণের কেজি ২শ’ টাকা হবে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এ গুজবের কারণে মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকাল ৮টা থেকে দক্ষিন ও উত্তর বাজারে লবণের ডিলার, পাইকারি বিক্রেতা ও খুচরা বিক্রেতাদের দোকানে লবণ ক্রয়ের জন্য ক্রেতারা হুমড়ি খেয়ে পড়ে। দুপুর দেড়টার মধ্যে ডিলার ও অনেক পাইকারি ব্যবসায়ীর গোডাউন লবণ শূন্য হয়ে যায়।
খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসন দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য মাঠে নামে। পাচঁটি ইউনিয়নের বিভিন্ন হাট-বাজারে প্রশাসনের কর্মকর্তারা অভিযান চালায়। হঠাৎ করে এভাবে লবণ ক্রয়ের কারণে অনেক ডিলার বা পাইকারি ব্যবসায়ীরাও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।
সততা স্টোরের মালিক গনেশ দাস বলেন, একটি গুজবের ওপরে ভর করে জনগণ হঠাৎ করে এভাবে লবণ কিনতে শুরু করেছে। আমরা আগের দামেই লবণ বিক্রি করছি। এ মূহুর্তে দাম বাড়ার কোনো সম্ভাবনাও নেই।
দক্ষিন বাজারের মুদি ব্যবসায়ী কামাল জানিয়েছেন, লবণের দাম বেড়ে গেছে এমন গুজবে দোকানের সব লবণ বিক্রি হয়ে গেছে। এক এক জন ১০/১৫ কেজি করে লবণ কিনে নিয়ে গেছে। এখন আর দোকানে কোনো লবণ নেই বলেও জানান তিনি।
কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. খালেদা খাতুন রেখা বলেন, লবণের মূল্য বৃদ্ধির গুজবের কারণে কাউখালীর বাজারে মঙ্গলবার লবণ ক্রয়ের জন্য ভীড় পড়ে যায়। খবর পেয়ে আমরা দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বাজারে ছুটে আসি। প্রত্যেক ডিলারকে বলে দিয়েছি এ মূহুর্তে লবণের কোনো সংকট নেই। তাই দাম বৃদ্ধির সম্ভবনাও নেই। আগে যে দামে ব্যবসায়ীদের কাছে লবণ বিক্রি করতো এখন সেই দামেই বিক্রি করতে হবে। এছাড়া খুচরা বিক্রেতাদের ১ থেকে ২ কেজির বেশি লবণ বিক্রি করতে নিষেধ করেছি।
তিনি আরো বলেন,যদি কোনো ডিলার বা ব্যবসায়ী বাজার মূল্যর চেয়ে বেশি দামে লবণ বিক্রি করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরএইচআর/এমআর