আমতলীর চরাঞ্চলের মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে
প্রথম পাতা »
বরগুনা »
আমতলীর চরাঞ্চলের মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে
আমতলী (বরগুনা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি:
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে আমতলী-তালতলীতে ভারী বর্ষণ চলছে। উপকুলীয় চরাঞ্চলের মানুষ আশ্রায় কেন্দ্রে যেতে শুরু করেছে। সাধারণ মানুষের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। মানুষকে নিরাপদ স্থানে যেতে উপজেলা প্রশাসন ও ঘুর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচী কর্তৃপক্ষ মাইকিং করেছে। উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রায় কেন্দ্রে থাকা মানুষের জন্য শুকনা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বরগুনা জেলা শহরের সাথে ফেরী যোগাযোগ ও আমতলী পায়রা নদী বন্দর থেকে ঢাকাগামী লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।
আমতলী উপজেলা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচী সুত্রে জানাগেছে, ঘূর্ণিঝড় বুলবল পায়রা সমুন্দ্র বন্দর থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দুরে অবস্থান করছে। ১৫০ কিলোমিটার বেগে শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ উপকুলীয় এলাকা অতিক্রম করতে পারে বলে ধারনা করছে সিপিপি । এ জন্য উপজেলা প্রশাসন ও ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচী (সিপিপি) কর্তৃপক্ষ মানুষকে সচেতন করে নিরাপদ স্থান আশ্রায় কেন্দ্রে যেতে মাইকিং করেছে। ঘূর্ণিঘড় প্রস্তুতি কর্মসূচির ১১৫ টি টিমে এক হাজার ৭’শ ২৫ জন সেচ্ছাসেবী কাজ করছে। নদী ও সাগরে অবস্থানরত সকল ধরনের নৌযান নিরাপদ স্থানে আশ্রায় নিয়েছে। পায়রা সমুদ্র বন্দর তৎসংলগ্ন এলাকা আমতলী ও তালতলীকে ৭ নম্বর সংঙ্কেতের পরিবর্তে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ঘুর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে আমতলী-তালতলীতে শনিবার সকাল থেকে ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে। আকাশ মেঘলা রয়েছে। হালকা বাতাস বইছে। আতঙ্কে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। ইতিমধ্যে উপকুলীয় এলাকার মানুষ নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। দুপুর ১টা পর্যন্ত আমতলী উপজেলার ৯৩ টি ও তালতলী উপজেলায় ৪৯ টি আশ্রায় কেন্দ্রে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে বলে জানান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারা। তরে বিকেল নাগাদ এ সংখ্যা লক্ষাধীক ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারনা করেছেন তারা। উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রায় কেন্দ্রে অবস্থানরত মানুষের জন্য দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদিকে বরগুনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থানরত মানুষের জন্য সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের শুকনো খাবার সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছেন। উপজেলার সকল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরা শুকনো খাবার সরবরাহ করেছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন শনিবার দুপুরে বিভিন্ন আশ্রায় কেন্দ্র পরিদর্শন করে শুকনো খাবার বিতরন করেছেন।
চাওড়া ইউনিয়ন সিপিপি’র টিম লিডার মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মনিরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, আমতলী উপজেলায় ১১৫ টি টিমে ১ হাজার ৭’শ ২৫ জন সেচ্ছাসেবী কাজ করছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে কোন অর্থ বরাদ্দ নেই। অর্থ বরাদ্দ না থাকায় সেচ্ছাসেবীদের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। দ্রুত সেচ্ছাসেবীদের যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য অর্থ বরাদ্দের জন্য দাবী জানাই।
আমতলী উপজেলা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচীর সহকারী পরিচালক কেএম মাহতাব-উল- বারী বলেন, ঘুর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলায় ৮ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ১১৫ টি টিমে ১ হাজার ৭’শ ২৫ জন সেচ্ছাসেবী কাজ করছে।
তালতলী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মহসীন মিয়া বলেন, মানুষকে আশ্রায় কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে লোকজন আশ্রায় কেন্দ্রে যেতে শুরু করেছে। তবে বিকেল নাগাল উপকুলের সকল মানুষকে আশ্রায় কেন্দ্রে আনার জন্য সকল কার্যক্রম নেয়া হয়েছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন বলেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলয় সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। মানুষকে নিরাপদ স্থানে নেয়ার জন্য কাজ করছি। নিরাপদ স্থানে থাকা মানুষজনকে শুকনো খাবার বিতরন করা হয়েছে।
এমএইচকে/এমআর
বাংলাদেশ সময়: ১৪:৫৬:২৭ ●
১১২০ বার পঠিত
(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)