তজুমদ্দিন (ভোলা) সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
ভোলার তজুমদ্দিনে বেড়িবাঁধে বনায়নের বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রাতের আঁধারে পাচারের সময় আটক করে স্থানীয়রা। পরে বন বিভাগ ২৭ পিজ গাছ উদ্ধার করে গ্রাম পুলিশের হেফাজতে রাখেন। ইতিপূর্বে চোরাই চক্র বনায়নের গাছ কেটে এলাকার বিভিন্ন পুকুরে ডুবিয়ে রাখায় ওইগুলোও উদ্ধারে কাজ করছে বনবিভাগ।
বনবিভাগ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, উপজেলার গুরিন্দা বাজার হতে কাটাখালী পর্যন্ত বেড়িবাঁধে বনবিভাগ স্থনীয়দের সহায়তায় বনায়ন করে। বর্তমানে ভাঙনের কবলে পড়ে বেড়িবাঁধটি। ফলে বনায়নের গাছগুলো জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ে যায়। এ সুযোগে সমিতির সভাপতি গাছগুলোকে নিলামের প্রক্রিয়া না করে গোপনে বিক্রি করা শুরু করেন। একটি চোরাই চক্রের সহযোগীতায় রাতের আধারে ব্রিকস্ ফিল্ডে সরবরাহসহ বিভিন্ন সময় পাচার হয় গাছগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২ নভেম্বর রাতে স্থানীয় শাখাওয়াত হোসেন (মনজু ডাক্তার) এর ট্রাকে করে বেড়িবাঁধের গাছ পাচারের সময় স্থানীয়রা ধাওয়া করে। সমিতির সদস্য ও স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ ইউসুফ, আবু কালাম, নুরু মিয়া, ইলিয়াছ, আব্দুল হান্নানসহ অনেকে জানান, ১নং বিটের সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ উল্যাহ ও তার ছেলে রাসেল উপস্থিত থেকে লোকজন দিয়ে রাতে ট্রাকে গাছ উঠিয়েছে পাচারের উদ্দেশ্যে। গাছ পাচারের সংবাদ জানাজানি হলে সমিতির সদস্যসহ স্থানীয়রা ধাওয়া করলে কিছু গাছ পুকুরে ফেলে দিয়ে বাকি গাছ নিয়ে পালিয়ে যায় ট্রাক। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য মোঃ রতন মিয়া বলেন, প্রায় সময়েই বেড়িবাাঁধের গাছসহ বনবিভাগের গাছ চুরি হওয়ার কথা জনগণ আমাদের কাছে অভিযোগ করেন। কিছুদিন পূর্বে আনন্দ বাজারের ইব্রাহিম হাওলাদারের স-মিল থেকে ৬পিজ চোরাই গাছ উদ্ধার করে বনবিভাগ। এছাড়াও বেড়িবাাঁধে প্রায় দুইশতাধিক গাছ পড়ে রয়েছে। তা দ্রুত নিলামের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। ১নং বিট সমিতির সদস্য মোঃ শাজাহান জানান, ইব্রাহিম হাওলাদারের স-মিল থেকে উদ্ধার হওয়া গাছ চাঁচড়ার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে সাইফুদ্দিন সুমনের মাধ্যমে মিলে গেলেও বনবিভাগ গাছ উদ্ধারের পর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ১নং বিট সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম জানান, সমিতির সভাপতি সব কাজ নিজের মনমতো করেন। বেড়িবাঁধের গাছগুলো পানিতে পড়ে নষ্ট হয়ে গেলেও আমাদের সাথে কোন পরামর্শ করেনি। ১নং বিট সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ উল্যাহ মিয়া বলেন, উদ্ধার হওয়া গাছের মধ্যে ৮ পিজ গাছ আমার মালিকানা। বাকিগুলি কোথায় থেকে আনা হয়েছে তা আমার জানা নেই। বনবিভাগের শশীগঞ্জ বিটের কর্মকর্তা আরিফ হোসেন জানান, চাঁচড়া ১নং ওয়ার্ডের শাজাহানের পুকুর থেকে ৮পিজ ও ফজলে রহমান পন্ডিতের পুকুর থেকে ১৯ পিজসহ মোট ২৭পিজ কাঠ উদ্ধার করা হয়েছে। পাচারের সময় রাতে স্থানীয়রা ধাওয়া করলে কাঠগুলো ফেলে রেখে চোরা কারবারিরা পালিয়ে যায়।
আরএস/এমআর