’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে পটুয়াখালীর প্রথম শহীদ আলাউদ্দিনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রথম পাতা » লিড নিউজ » ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে পটুয়াখালীর প্রথম শহীদ আলাউদ্দিনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
মঙ্গলবার ● ২৯ জানুয়ারী ২০১৯


---

কলাপাড়া সাগরকন্যা অফিস॥
’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে বরিশালের রাজপথে স্বৈরাচারী শাসক আইয়ুব-মোনায়েম বাহিনী ইপিআরের গুলিতে নিহত কলাপাড়ার হাজীপুর গ্রামের বীর সন্তান শহীদ আলাউদ্দিনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ, ২৮ জানুয়ারি। আজও অবহেলায় পার হয় দিনটি। উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের হাজীপুর গ্রামের মমতাজ উদ্দিন মৌলভী আর রাশিদা বেগমের একমাত্র পুত্র ছিল আলাউদ্দিন। অযত্ন অবহেলায় পড়ে আছে তার সমাধিস্থল। সঠিকভাবে সংরক্ষিত হয়নি তার স্মৃতিচিহ্ন। ইতিহাসেও তুলে ধরা হয়নি তাকে যথাযথ ভাবে। প্রতিবছরের মতই এবারও কোন অনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই নীরবেই কেটে যাচ্ছে মৃত্যুবার্ষিকী। বরিশালে নেয়া হয়েছে অশ্বিনী কুমার হল চত্বওে শহীদ প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও আলোচনা সভা। সবশেষ তার কবরটি কয়েকবছর আগে সংরক্ষণ করা হয়েছে। গ্রামের বাড়িতে তাঁর সহপাঠিরা দিনটিতে বিশেষ দোয়া মোনাজাতের আয়োজন করেন। গণঅভ্যুত্থানে পটুয়াখালীর একমাত্র শহীদ বরিশাল একে স্কুলের তৎকালীন সময় নবম শ্রেণির ছাত্র শহীদ আলাউদ্দিনের মহান আত্মত্যাগের কথা এপ্রজন্ম ভুলে যাচ্ছে।
জন্মের দু’ছর পর ১৯৫৪ সালে বাবা মারা যায় শহীদ আলাউদ্দিনের। প্রতিবাদী আর স্বপ্নচারী এ কিশোর হাজীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয এবং জুনিয়র মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠ চুকিয়ে বিধবা মা আর একমাত্র বোনেকে রেখে নবম শ্রেনীতে ভর্তি হন বরিশাল একে স্কুলে। ’৬৯ এর উত্তাল দিনের ২৮ জানুয়ারি সকালে মায়ের কাছে লেখা চিঠি পোস্ট করতে গিয়ে, যোগ দিয়েছিলেন পাকি স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের মিছিলে। ২৯ তারিখ বিকাল চারটায় পকেটে রাখা রক্তে ভেজা সেই চিঠিসহ মায়ের কাছে ফেরত এসেছিল তার লাশ। গ্রামের বাড়িতে মায়ের চোখের সামনেই দাফন করা তাকে। দাফনের পর থেকেই অযতœ অবহেলায় পড়ে থাকে এ শহীদের কবর। পাঁচ বছর আগে কবরটি বাধাঁই করা হলেও পারিবারিক অস্বচ্ছলতায় পালিত হয়না যথাযথভাবে মৃত্যুদিবস। রাজনৈতিক কিংবা সরকারিভাবে তাকে নিয়ে কোন স্মরনসভা। কেবলমাত্র ভাষা দিবসে স্থানীয় বিদ্যাপীঠের ছাত্র-ছাত্রীরা ফুলেল শ্রব্দায় তাকে স্মরন করে।
১৯৭০ সালে বন্যার পর দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দুর্দশা নিজ চোখে দেখতে আসেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সেদিন এই জনপদে বাঙালির মহানায়ক এসে প্রথমেই খোঁজ নেন ছাত্রলীগের কিশোর কর্মী আলাউদ্দিনের পরিবারের। বঙ্গবন্ধু তার মাকে পৌছে দেয়ার জন্য আলাউদ্দিনের ভগ্নিপতির হাতে দিয়েছিলেন পাঁচশত টাকা। দিয়েছিলেন একটি টিউবয়েল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতবার কলাপাড়ায় এসেছেন ততবারই খোঁজ নিয়েছেন এ পরিবারের।
শহীদ আলাউদ্দিনের সহপাঠী শামসুদ্দিন বরিশালের এ্যাড, খান আলতাফ হোসেন ভুলু জানান, তিনি ওই সময় সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ছিলেন। তাঁরা তখন বরিশালে একটি সড়কের নামকরন করেছিলেন শহীদ আলাউদ্দিন সড়ক। বর্তমানে তাঁরা লেবুখালী সেতুর নাম শহীদ আলাউদ্দিন সেতু নামকরনের প্রস্তাবনা লিখিতভাবে সরকারের উপর মহলে দিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০:৫৯:৫৬ ● ৭১২ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ