টুঙ্গিপাড়া সাগরকন্যা প্রতিনিধি॥
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ বুকে ধারণ করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের ( বিএনসিসি) ২১ জেলার ক্যাডেটরা আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার শপথ নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিএনসিসির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল বাতেন খানের নেতৃত্বে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধের বেদীতে ফুল দিয়ে ক্যাডেটরা তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
পরে তারা পবিত্র ফাতেহাপাঠ ও বঙ্গবন্ধুর রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া মোনাজাত করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ক্যাডেটরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে উন্নত, সমৃদ্ধ ও আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার শপথ নেয়। এ সময় পদস্থ সামরিক ও বিএনসিসি কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিএনসিসি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল বাতেন খান ক্যাডেটদের সাথে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন। পরে তিনি টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজরিত স্থান ক্যাডেটদের সাথে নিয়ে ঘুরেঘুরে দেখেন। এ ব্যাপারে তিনি ক্যাডেটদের ব্রিফ করেন।
বিএনসিসি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল বাতেন খান বলেন, ক্যাডেটরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে উন্নত, সমৃদ্ধ ও আধুনিক বাংলাদেশ গড়বে। তার কখনোই মাদক, সন্ত্রাস ও অবৈধ ডিভাইস অপব্যবহারের পথ বেছে নেবেনা। মানবিক গুন সম্পন্ন মানুষ হয়ে উঠবে। তাদের মধ্যে নেতৃত্ব দেয়ার সৃস্টি হয়েছে। তারা দেশ ও মানুষের জন্য কাজ করবে। শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, খেলাধূলা ও সাংস্কৃতির চর্চা করে তারা নিজেদের যোগ্য করে গড়ে তুলবে। এখানে ২১ জেলার ক্যাডেটরা একসঙ্গে মহান নেতার সমাধিতে আসার সুযোগ পেত না। ক্যাম্পিং এর সুবাদে তারা এখানে এসে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জেনেছে। নেতৃত্ব দিতে হলে নিজের মধ্য থেকেই দিতে হয়, সে জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে হয়। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজরিত স্থান দেখে ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জেনে তারা এমনটাই শিখেছে। সে জন্য বিলাস বহুল জীবনের প্রয়োজন হয়না। সাধারণ জীবণ যাপন করে প্রাকৃতিক পরিবেশে বেড়ে উঠেই বঙ্গবন্ধু দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এটাও তারা অনুধাবণ করেছে। আমরা তাদের ২১ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার উপযোগী করে প্রশিক্ষণ দিয়েছি।
ক্যাডেট খুলনা কমার্স কলেজের অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্রী মাদরিয়া মনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের জাতির পিতা । তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি। তার কারণেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। আজকে আমরা জাতির পিতার সমাধি সৌধে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে আমরা সত্যিই গর্বিত। তিনি না থাকলে আর বাংলাদেশের সৃষ্টি হতো না। আমরা জাতির পিতার আদর্শকে বুকে ধারণ করে তাঁর প্রদর্শিত পথে দেশকে নেতৃত্ব দিতে চাই।
সরকারি শেখ মুজিবুর রহমান কলেজের ক্যাডেট শরিফুল ইসলাম বলেন আমরা মোট ২১ টি জেলা থেকে ৪৮৮ জন ক্যাডেট গোপালগঞ্জ শেখ কামাল স্টেডিয়ামে এসেছি রেজিমেন্ট ক্যাম্পেইন করেছি। এটি শেষে আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছি। জাতির জনকের বিষয়ে জানার আগ্রহ নিয়ে আমাদের টুঙ্গিপাড়া আশা। এখানে এসে আমরা অনেক কিছুই জানতে পারছি তার সম্পর্কে। আর আমরা জাতির পিতার আদর্শ, দর্শন , মতবাদ, বুকে ধারণ করে দেশকে সমানের দিকে এগিয়ে নেব। এ মহান রাষ্ট্রনায়কের জন্যই আমরা একটি স্বাধীন দেশ ও একটি পতাকা পেয়েছি। যা বিশ্বের বুকে আমাদের পরিচয় বহন করে। আমরা কাজ করে দেশের গন্ডি পেড়িয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাব ইনশাল্লাহ।
এ দিকে গোপালগঞ্জে বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোরের সুন্দরবন রেজিমেন্টের ১০ দিনের ক্যাম্পিং শেষে সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে গোপালগঞ্জ শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সামপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনসিসি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল বাতেন খান। তিনি কুচকাওয়াজ সালাম গ্রহন করেন। ক্যাম্পিং এ অংশগ্রহনকারী চ্যাম্পিয়ন, রানার্সআপ দল ও শ্রেষ্ঠ দল নেতাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধান অতিথি।
এতে ঢাকা, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ২১ জেলার বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮৮ জন পুরুষ ও মহিলা ক্যাডেট অংশ নেন। গত ৯ অক্টোবর থেকে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এ ক্যাম্পিং শুরু হয়।
ক্যাডেটদেরকে মৌলিক প্রশিক্ষণ ড্রিল, রণকৌশলসহ আত্মোন্নয়ন ও প্রাথমিক চিকিৎসা, বন্যা ও দূর্যোগ মোকাবেলায় করণীয়, অগ্নি নির্বাপন পদ্ধতিসহ সমাজ সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ, খেলাধূলা ও বিভিন্ন প্রকার সাংস্কৃতিক কর্মকার্ড বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।