মেজবাহউদ্দিন মাননু, কলাপাড়া সাগরকন্যা অফিস॥
তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রায় প্রথম সার্ভিস জেটির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বেলা ১১টায় জেটিতে অত্যাধুনিক ক্রেনের মাধ্যমে পণ্য ওঠা-নামার কার্যক্রম শুরু করা হয়। টিয়াখালীর আন্ধারমানিক নদীতে এ সার্ভিস জেটি স্থাপনে ২১ টাকা ব্যয় হয়েছে। ৮০ মিটার দীর্ঘ ২৪ মিটার প্রস্থ সার্ভিস জেটির সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে ২৯ কোটি টাকার ৬৪ টন লিফটিং ক্ষমতা সম্পন্ন অত্যাধুনিক বহুমুখি মোবাইল হারবার ক্রেন। জার্মান থেকে ক্রেনটি কেনা হয়েছে। এই ক্রেনের মাধ্যমে প্রথম সাভিস জেটির ব্যবহার শুরু হয়। পায়রা বন্দরের ক্যাপিট্যাল ড্রেজিংএ নিয়োজিত বেলজিয়াম ভিত্তিক কোম্পানী জানডিনুল এর কন্টেনারবাহী (যন্ত্রপাতি) পণ্য খালাসের মাধ্যমে পায়রা বন্দরের জেটি ও ক্রেন আনুষ্ঠানিকভাবে সচল করা হয়। যোগ হলো পায়রায় এক নতুন মাত্রা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন পায়রা বন্দরের সুপারিনটেনডেন্ট (লাইটার এন্ড মুরিং) এসএম ইমতিয়াজ ইসলাম, উপ-পরিচালক নিরাপত্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোস্তাফিজুর রহমান, সহকারী পরিচালক (নিরাপত্তা) মো. সোহেল মীর, সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুত) মো. আসাদুল্লা আশিক।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ১৯ নবেম্বর পায়রা বন্দরের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। এ প্রকল্পটিকে ফ্যাস্ট ট্রাক প্রকল্পের অন্তর্ভূক্ত করা হয়। সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রমকে ১৯টি কম্পোনেন্টে বিভাজন করা হয়। যেখানে দেশের (জিটুজি) অর্থায়ন এবং সরকারি বেসরকারি অংশিদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে এর বাস্তবায়ন চলছে। স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘ মেয়াদী তিন ধাপে চলছে বন্দরের কার্যক্রম। ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট সীমিত পরিসরে পায়রা বন্দরের নৌপথে বাণিজ্যিক জাহাজ হতে লাইটার জাহাজে পণ্য খালাশের মধ্য দিয়ে অপারেশনাল কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা। পায়রা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছেন এ পর্যন্ত ৩৫টি জাহাজের পন্য খালাসের মাধ্যমে সরকার ১১০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় করেছে।
এসএম ইমতিয়াজ ইসলাম জানান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ এবং ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নে গৃহীত ১০ ফাস্টট্র্যাক প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর হিসেবে পায়রা বন্দর অন্যতম। বর্তমানে বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়ন এবং অপারেশনাল কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। এর ধারাবাহিকতায় পায়রা বন্দরের জেটি এবং ক্রেনের অপারেশন শুরু হলো। এছাড়া বন্দরের কার্যক্রমের সঙ্গে যোগ হয়েছে ৩০টন ক্যাপাসিটির একটি মোবাইল হাইড্রোলিক ক্রেন এবং ২৫ টন ক্যাপাসিটির ফর্ক লিফট। ক্রেনটির মাধ্যমে হুক, গ্রাব এবং স্পিডার এ তিন ধরনের অপারেশন করা হচ্ছে। এছাড়াও ডিআইএসএফ প্রকল্প, কোল টার্মিনাল প্রকল্প, ফাস্ট টার্মিনাল প্রকল্প, মাল্পিপারপাস টার্মিনাল এবং বেলজিয়াম ভিত্তিক কোম্পানী জানডিনুল এর মাধ্যমে বন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ড্রেজিং কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
পায়রাবন্দরের কার্যক্রম শুরু হওয়ায় পন্য আমদানী ও রফতানির মাধ্যমে পটুয়াখালী, বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শিল্পায়ন এবং বাণিজ্যিক প্রসার ঘটবে যার ফলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ভাবে দ্রুত সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠবে বলে আশা করি। পায়রা বন্দরের সার্ভিস জেটিতে পণ্য খালাশে বন্দর এলাকায় বিরাজ করছে নতুন আমেজ। এবং সড়ক পথে পণ্য খালাশের কার্যক্রম সচল হলো।
এমইউএম/এমআর