খালেদা জিয়া মুক্তি পেলেই গণতন্ত্র মুক্তি পাবে: ফখরুল

প্রথম পাতা » রাজনীতি » খালেদা জিয়া মুক্তি পেলেই গণতন্ত্র মুক্তি পাবে: ফখরুল
রবিবার ● ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯


খালেদা জিয়া মুক্তি পেলেই গণতন্ত্র মুক্তি পাবে: ফখরুল

ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥


বর্তমান সরকার একদলীয় শাসন ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছে। তাই এই মুহূর্তে খালেদা জিয়ার মুক্তি দরকার। তিনি মুক্তি পেলেই গণতন্ত্র মুক্তি পাবে।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠের পূর্বপাশের পাকা রাস্তায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে দলের বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল আলমগীর একথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ খালেদা জিয়ার মুক্তি চায়। আপনাদের (সরকারের) সব জারিজুরি ফাঁস হয়ে গেছে। ক্ষমতা দিয়ে আর টিকে থাকা যাবে না। তাই এখনও সময় আছে সংসদ ভেঙে দিয়ে অবিলম্বে নিরপেক্ষ কমিশনের অধীনে নির্বাচন দিন। সমাবেশে বিএনপির প্রেসিডিয়াম সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, মিথ্যা সাজানো মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে এখন রক্ত দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। যেদিন আমরা আন্দোলনে নেমে রক্ত দেবো সেদিন তিনি মুক্তি পাবেন। তাই প্রস্তুতি নিন, গুলিকে আর ভয় করা যাবে না। প্রাণ দিয়ে হলেও দলীয় চেয়ারপারসনকে মুক্ত করতে হবে। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দেশের সব মানুষ খালেদা জিয়ার মুক্তি চায়। কেবল একজন মানুষ চান না খালেদা জিয়ার মুক্তি হোক। উনি হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই এবার গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নেত্রীকে মুক্ত করা হবে। আন্দোলনে বাধা দিলে এবার পরিণতি হবে ভয়াবহ। এ সময় নেতাকর্মীদের সংগ্রামে নেমে পড়ার আহ্বান জানান বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা।
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে অপরাধী প্রমাণ করতে ৪৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছে সরকার। তারপরও তারেক রহমানকে অপরাধী প্রমাণ করতে পারেনি। তিনি বলেন, ৪৫ হাজার কোটি টাকার উৎস কি ক্যাসিনো? নাকি শেয়ার বাজার লুটের টাকা এগুলো? নাকি বাংলাদেশ ব্যাংক লুটের টাকা? এটি জানতে চায় জাতি। মির্জা আব্বাস বলেন, বেগম জিয়াকে দুই কোটি টাকার জন্য আটকে রাখা হয়েছে। আদালতে প্রমাণ হয়নি এই টাকা আত্মসাৎ করেছেন তিনি। ওই টাকা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে আছে। দিনে দিনে সুদে-আসলে ওই টাকা ছয় কোটি হয়েছে এখন। এই টাকার জন্য বেগম জিয়াকে আটকে রাখা হয়েছে এটি বিশ্বাস করতে চাই না। তাকে আটকে রাখা হয়েছে দেশে লুটপাট করার জন্য। ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য। ভারতে দুর্গাপূজায় শুভেচ্ছা উপহার হিসেবে ইলিশ পাঠানো প্রসঙ্গে মির্জা আব্বাস বলেন, পূজা উপলক্ষে ভারতকে ৫০০ মেট্রিক টন ইলিশ উপহার দেয়া হলো। বিনিময়ে আমরা কি পেলাম? ইলিশ উপহারের দিনে আট বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেলো বিএসএফ। এসব কবে বন্ধ হবে?। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যের উদ্দেশ্য করে মির্জা আব্বাস বলেন, সম্প্রতি যুবলীগের সভাপতি ক্ষিপ্ত হয়ে বললেন, ১২ বছর ধরে পুলিশ ভাইয়েরা, র‌্যাব ভাইয়েরা কি আঙুল চুষছিলেন? সাতটি স্পটে ক্যাসিনো খেলা হয়, এই সাতটি স্পটের সাতটি থানার র‌্যাব এবং পুলিশকে গ্রেফতার করতে হবে। একবার ভেবে দেখুন, আপনারা কাকে পাহারা দিচ্ছেন? আমাদের বহু নেতাকর্মী খুন হয়েছেন, গুম হয়েছেন। গ্রেফতার হচ্ছেন। একটা সময় আসবে, তখন এরাই বলবে, আমারা পুলিশকে কোনো নির্দেশ দেইনি। সুতরাং এদের পাহারা দিয়ে লাভ নেই।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য, মির্জা আব্বাস, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুু, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুসহ শীর্ষ নেতারা মহাসমাবেশে উপস্থিত ছিলেন। রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের সভাপতিত্বে মহাসমাবেশ বিএনপি চেয়রাম্যানের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, দলের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল মনির, সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাদিম মোস্তফা।
এ ছাড়া বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, কৃষক দলের স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরা মহাসমাবেশে বক্তব্য রাখেন। মহাসমাবেশ পরিচালনা করেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল হক মিলন। মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজশাহী মহানগরীতে ব্যাপক নিরাপত্তা গ্রহণ করে রাজশাহী মহানগর পুলিশ। গতকাল রোববার সকাল থেকেই মহানগরীর মোড়ে মোড়ে পুলিশের বাড়তি নিরাপত্তা দেখা গেছে। সমাবেশস্থলে রাজশাহী মহানগর পুলিশের কুইক রেসপন্স টিমের (সিআরটি) সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। প্রস্তুত রাখা হয় জলকামান ও এপিসি কার। এর আগে গত শনিবার ২২টি শর্তে রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠের পূর্বপাশের পাকা সড়কে বিএনপিকে বিভাগীয় মহাসমাবেশ করার অনুমতি দেয় রাজশাহী মহানগর পুলিশ (আরএমপি)।

এফএন/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ২০:৪৯:৪৩ ● ৩৬৫ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ