দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি॥
পটুয়াখালীর দুমকিতে আদালতের একতরফা ডিগ্রী ও কবলা সূত্রে মালিকানা প্রতিষ্ঠায় দু’পক্ষই বিরোধী জমি দখলে মরিয়া হয়ে ওঠেছে। আইনী লড়াইয়ের পাশাপাশি পেশী শক্তি ব্যবহারের গোপন প্রস্তুতিতে দু’পক্ষের মধ্যে বিরাজ করছে তীব্র উত্তেজনা। যে কোন মুহুর্তে পক্ষদ্বয়ের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সহিংসতার আশংকা রয়েছে। উপজেলার আঠারগাছিয়া গ্রামের প্রভাবশালী সিকদার ও হাওলাদার পরিবারের মধ্যে বিরোধীয় ৮.৮৭ একর জমির দখল নিয়ে দু’পরিবারে চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, উপজেলার আঠারগাছিয়া নেছারিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন প্রভাবশালী কালাম সিকদার গংদের সাথে হাবিবুর রহমান হাওলাদার গংদের মধ্যে জমিজমা সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধ চলছে। আঠারগাছিয়া মৌজার সাবেক খেবট ৬৯/১১৩/৩২/১৮৬ রেকর্ডি অংশিদার হাবিবুর রহমান হাং ২২৯/১৩ বাটোয়ারা মামলায় একতরফা ডিগ্রী ও চুড়ান্ত ডিগ্রী লাভ করেন। একই খেবটের আরএস ও এসএ খতিয়ানের নিলাম খরিদ সূত্রে রেকর্ডিও মালিক ফটিকজানের কাছ থেকে ২১ কবলা দলিলে ৮.৮৭একর জমির ক্রয় সূত্রে মালিক হয়ে আবুল কালাম সিকদার গংরা অন্তত: ৩৫/৪০ বছর যাবৎ ভোগ দখল করে আসছেন। কবলাকৃত জমিতে আঠারগাছিয়া নেছারিয়া মাদ্রাসা, ইবতেদায়ী, দাখিল মাদ্রাসা ও আঠারগাছিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৩/৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, হেফজখানা ও বসত:ভিটা রয়েছে। দু’পক্ষেই উল্লেখিত সম্পত্তি দখলে মাঠে নামলে কয়েক দফায় হামলা, সহিংসতার ঘটনায় প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জননিরাপত্তা আইনসহ বিভিন্ন ধারার অপরাধে ৭/৮টি ফৌজদারী ও সিভিল মামলা বিচারাধীণ আছে। বর্তমানে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করে যে কোন মূল্যে বিরোধীয় জমির দখল পেতে একে অপরের মুখোমুখী অবস্থানে তৎপর রয়েছে। যে কোন সময়ে ওই জমির দখল নিয়ে হামলা, সহিংসতা, খুন-জখমের শংকায় উদ্বিগ্ন সময় পার করছে উভয় পক্ষ।
একতরফা ডিগ্রীতে জমির দাবিদার হাবিবুর রহমান হাওলাদারের দাবি, নি¤œ আদালতের ডিগ্রী পরবর্তিতে চুরান্ত ডিগ্রী পাওয়ার পর আদালতের মাধ্যমে ঢোল সহরত করে তাদের দখল বুঝি দেয়া হয়েছে। ওই জমিতে প্রতিপক্ষের আইনগত কোন দাবী থাকতে পারে না। তিনি আইনী সাহায্যে পেতে থানা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন।
অপর পক্ষে কবালাদার আবুল কালাম সিকদারের অভিযোগ, সিএস খেবটের বাটোয়ারা মামলায় কবলাদারদের পক্ষ করা হয়নি। মামলাবাজ হাবিব গংরা মামলার নোটিশ গোপন রেখে একতরফা ডিগ্রী করে সম্পত্তি থেকে তাদের ২১ কবলাদারকে উচ্ছেদের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। এ বিষয়ে ইউনিয়ন, পরিষদ, উপজেলা পরিষদের একাধিক সালিশ বৈঠকের রোয়েদাদ থাকলেও প্রতিপক্ষ শালিসের সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করে বে-আইনী ভাবে ওই সম্পত্তি থেকে তাদের উচ্ছেদ তৎপড়তা চালাচ্ছেন।
এ বিষয়ে দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মনিরুজ্জামান বলেন, জমি-জমার মালিকানা বিষয়টি সিভিল আদালতের এখতিয়ার। আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখার দায়িত্ব পুলিশের। কোন পক্ষই যাতে সহিংসতায় না জড়ায় সেজন্য পক্ষদ্বয়কে ডেকে সতর্ক করা হয়েছে। এর পরেও কোন পক্ষ সহিংসতায় জড়ালে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে ।
এমআর/কেএস