ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
শামীম-খালেদ ও স¤্রাটদের মতো আওয়ামী লীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগে শত শত নেতা রয়েছেন যারা চাঁদাবাজি, ক্যাসিনোসহ নানা ধরনের অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। এখন মিডিয়ায় সবই আসছে। কিন্তু ক’দিন পর তা ধামাচাপা পড়ে যাবে।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এসব কথা বলেন। কারান্তরীণ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে অ্যাগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (অ্যাব) উদ্যোগে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, এরা মাত্র তিনটি নাম, এ রকম আরও শত শত নাম আছে, শত শত মানুষ আছে, যারা যুবলীগ করে। তারা এসব ব্যবসা করে, চাঁদাবাজি করে, ক্যাসিনো চালায়, জুয়ার আসর বসায়। আজকে পত্রিকায় এসব খবর প্রচার হচ্ছে। কয়েকদিন পরেই এসব ধামাচাপা পড়ে যাবে। এর সঙ্গে জড়িত প্রভাবশালী এমপি, মন্ত্রীরা জড়িত। তাদের প্রভাবে এদের শেষ পর্যন্ত কিছুই হবে না।
তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান সম্মত হয়নি। সেজন্য আমাদের দেশে একটি জবাবদিহিতাবিহীন সরকার বিরাজ করছে। আজকে যে নৈরাজ্য সন্ত্রাস দেখছেন এর কারণ হলো দেশে কোনো প্রতিনিধিত্বশীল সরকার নাই। যার কারণে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নাই। তাদের নিজেদের দলের নেতাকর্মীদের দুর্নীতি এমন প্রসার লাভ করেছে যে সরকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে। যার প্রমাণ গত ২ সপ্তাহে পেয়েছি। ‘ছাত্রলীগেও অনেক শোভন-রাব্বানী রয়েছে’ দাবি করে মওদুদ বলেন, আমি তো কল্পনাই করতে পারি না যে, একজন ছাত্রনেতা ৮৬ কোটি টাকা কিভাবে চাঁদাবাজি করবে! আজকে দুর্নীতি দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে গেছে। নিজেদের দলের মধ্যে তো আছেই, এমনকি ১১ জন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত। মধ্যে তিনজনের কুশপুত্তল পোড়ানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নিজের জেলার একটি বিশ্ববিদ্যালযের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে কুশপুত্তল পোড়ানো হয়েছে। উপাচার্যরা অনেক সম্মানিত, কিন্তু এখন তারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছেন।
সরকারের পদত্যাগ দাবি করে মওদুদ বলেন, সরকারকে পদত্যাগ করে দেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে। সেই নির্বাচনের মাধ্যমে সত্যিকারের জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার গঠিত হতে হবে। তবেই এই নৈরাজ্য, চাঁদাবাজি, ক্যাসিনো, দুর্নীতি দূর হবে। তিনি বলেন, আজকে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। আর গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হলে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তাকে একটি বানোয়াট মামলায় জেলখানায় থাকতে হচ্ছে। যেই অপরাধের জন্য তার সাতদিনের মধ্যে জামিন হওয়ার কথা। অথচ রাজনৈতিক কারণে সরকারের ইন্দনে জামিন দেওয়া হচ্ছে না। খালেদা জিয়াকে এই সরকার ভয় পায়। কারণ তারা জানে খালেদা জিয়া মুক্ত হলে দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে। আইনের শাসন ফিরে আসবে। ‘খালেদা জিয়াকে আইনের আওতায় মুক্ত করা সম্ভব হবে না’ উল্লেখ করে এই আইনজীবী বলেন, কোনো আদালতে খালেদা জিয়ার জন্য সুসংবাদ নেই। রাজপথই একমাত্র পথ। সেজন্য সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে মুক্ত করে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।
আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক রাশিদুল হাসান হারুণের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, বিএনপি নেতা শামসুল আলম তোফা, গোলাম হাফিজ কেনেডি, প্রফেসর ড. মোস্তাফিজুর রহমান, চৌধরী আব্দুল্লাহ আল ফারুক, নাসির উদ্দিন মিল্টন, ড. মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।
এফএন/এমআর