আমতলীর ছোট নীলগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সরকারী বই বিক্রি!

প্রথম পাতা » বরগুনা » আমতলীর ছোট নীলগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সরকারী বই বিক্রি!
মঙ্গলবার ● ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯


প্রতীকী চিত্র
আমতলী প্রতিনিধি ॥
বরগুনার আমতলী উপজেলার ছোট নীলগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মোশাররফ হোসেন  বিদ্যালয়ের সরকারী বই বিক্রি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা এ অভিযোগ করেছেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মোশাররেফ হোসেন সরকারী বই বিক্রি করার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিগত কয়েক বছরের আভ্যন্তরিন পরীক্ষার পুরাতন লিখিত উত্তরপত্র ও ব্যবহারিক পরীক্ষার খাতা বিক্রি করেছি। তিনি আরো বলেন, ব্যাবস্থাপনা কমিটির অনুমতি নিয়েই বই বিক্রি করেছি।

জানাগেছে, উপজেলার ছোট নীলগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রায় চার শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। ওই শিক্ষার্থীদের সরকারীভাবে বই বরাদ্দ দেয়া হয়। চাহিদামত বই শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরন শেষে অবশিষ্ট বই,গত পাচ বছরের পরীক্ষার পুরাতন উত্তরপত্র, ব্যবহারিক খাতা ও পুরাতন বই বিদ্যালয়ের স্টকে মজুদ রাখেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই পুরাতন মজুদকৃত বই ও খাতা প্রধান শিক্ষক মোঃ মোশাররফ হোসেন কোন আভ্যন্তরিক ক্রয়-বিক্রয় কমিটিকে না জানিয়ে গত সোমবার বিক্রি করে দিয়েছেন।এনিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। নাম প্রকাশে কয়েকজন শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তার নিজের ইচ্ছা মাফিক পুরাতন ২৩ মণ বই ও খাতা বিক্রি করে দিয়েছেন।

বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর শিক্ষার্থী ফাহাদ ও জাকির হোসেন জানান, প্রধান শিক্ষক স্যারে বই বিক্রি করে দিয়েছেন। ওই বই একটি মিনি ট্রাক এসে বোঝাই করে নিয়ে গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দশম শ্রেনীর কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, প্রধান শিক্ষক আমাদের বই না দিয়ে ওই বই বিক্রি করে দিয়েছেন। স্যারের কাছে বই চাইলেই তিনি বই প্রতি আমাদের কাছে এক’শ টাকা দাবী করেন। যারা টাকা দিয়েছে তাদের বই দিয়েছেন, যারা টাকা দেয়নি তাদের বই দেয়নি।

বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিয়ান মোঃ আবু ছালেহ বলেন, বিগত দুই বছরে পাঁচ’শ ৫৫ সেট সরকারী বই পেয়েছি। সমুদয় বই শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরন করেছি। তিনি আরো বলেন, প্রধান শিক্ষক বিগত কয়েক বছরের পুরাতন বই, উত্তরপত্র ও ব্যবহারিক খাতা বিক্রি করে দিয়েছেন। বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোঃ জাহাঙ্গির আলম বই বিক্রির কথা স্বীকার করে বলেন, ব্যাবস্থাপনা কমিটির অনুমতি নিয়ে প্রধান শিক্ষক পুরাতন বই ও খাতা বিক্রি করেছেন। কিন্তু ক্রয়-বিক্রয় কমিটি বই বিক্রি করার বিষয়টি জানেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সভাপতি বিক্রি করতে বলেছেন, তাই  প্রধান শিক্ষক বই বিক্রি করেছেন।

বিদ্যালয়ের ব্যাবস্থপনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ নুরুল ইসলাম মৃধা পাঠ্যপুস্তক বিক্রির কথা অস্বীকার করে বলেন, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সিধান্ত মোতাবেক আভ্যন্তরিক পরীক্ষার পরিত্যাক্ত খাতা প্রধান শিক্ষক  বিক্রি করেছেন। আমতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার খন্দকার মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে আমি কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোসাঃ মনিরা পারভীন বলেন, বিষয়টি আমি জানিনা। খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এমএইচএকে/কেএস

বাংলাদেশ সময়: ১৭:০৭:৫৮ ● ৬৩০ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ