ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ক্যাসিনোসহ বিভিন্ন অপকর্মের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চলমান অভিযানে সরকার ও আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি বাড়বে। এতে সরকারের প্রতি মানুষের আস্থাও বাড়বে।
রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। বিগত কয়েক দিনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্লাব-ক্যাসিনোতে অভিযান চালিয়ে অকেনকেই গ্রেফতার করেছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। অভিযানে সরকার দলীয় সংগঠনের কয়েকজন নেতাও গ্রেফতার হয়েছেন। এই অভিযানের মাধ্যমে সরকারের ইমেজের ক্ষতি হবে কিনা- এমন প্রশ্নে আবদুর রাজ্জাক বলেন, আমি মনে করি না ইমেজের কোনো ক্ষতি হবে। বরং আমাদের ভাবমূর্তি বাড়বে। আমাদের ওপর মানুষের আস্থা বাড়বে। কিছু লোক দুর্নীতি করে যদি সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- কলঙ্কিত করে, সেটা তো গ্রহণযোগ্য নয়। ধুলাবালি, ময়লা, গন্ধ ঝাড়ু দিয়ে যদি কার্পেটের নিচে রেখে দেন, কেউ দেখবে না; তাতে কি ধুলাবালির অপকার থেকে আপনি রেহাই পাবেন? উট পাখি বালির মধ্যে মাথা ঢুকিয়ে দিলে তীব্র রোদ থেকে রেহাই পাবে না। আমি মনে করি, এটা ঢেকে রাখলে লাভ হতো না। যেটা করা হচ্ছে, সেটাতে দলের ভাবমূর্তি বাড়বে এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ হবে, ১৬ কোটি মানুষের উপকার হবে।
পেছনের গড ফাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা- এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, আই ওয়াশ করে তো বাংলাদেশের মানুষকে ধোঁকা দেওয়া যাবে না। দেশের মানুষ খুবই সচেতন। প্রধানমন্ত্রী আমাদের বলেছেন যে- যারা মানুষকে বিভ্রান্ত করছে, অপকর্ম করছে এটা কোনোক্রমেই মেনে নেওয়া যায় না। তারা যে লেভেলেরই হোক, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেব। সবাই আইনের আওতায় আসবে।
শুদ্ধি অভিযানে আরও বড় চমক রয়েছে কিনা- এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, অপেক্ষা করেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন নেত্রী। উনি দেশের বাইরে আছেন। স্বারষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, এ অভিযান চলমান থাকবে।
গণমাধ্যমে এসেছে ২৭ জন মন্ত্রী-এমপির তালিকা তৈরি করা হয়েছে, তারা বিভিন্ন অপকর্মের তালিকায় রয়েছে- এমন কথায় মন্ত্রী বলেন, কারো বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ থাকে, আমিও যদি হই, আমিও চাইবো সরকারের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেবে। কারো বিরুদ্ধে যদি ডেফিনিট কোনো প্রমাণ থাকে, অবশ্যই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেবে। দুদক তো প্রতিনিয়তই মামলা দিচ্ছে অনেক মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে। অনেক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদক তদন্তও করছে। সেটাও তো একটি প্রতিষ্ঠান। সুশাসনের যে কথাটা বলি, সুশাসন করতে হলে দুদক ও অন্যান্য যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আছে তাদেরকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আইনের ঊর্ধ্বে নয়। তাদেরকেও জবাবদিহি করতে হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেছেন আওয়ামী লীগের বিতর্কিত নেতাদেরও গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে, দলের মধ্যেও এ ধরনের ব্যক্তি আছে কিনা, প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ কিন্তু ডেভেলপিং কান্ট্রি। লাখ লাখ বেকার ছেলেরা আছে, এরাও আমাদের দলের সঙ্গে জড়িত। পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নাই, যেখানে দুর্নীতি নাই। দলের কেউ যদি দুর্নীতি, অনিয়ম ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত হয়, তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সরকারের আন্তরিকতা দেখতে হবে। এই যে ই- গভর্নেন্স করেছি, প্রধানমন্ত্রী করেছেন ডিজিটাইজেশন অব প্রকিউরমেন্ট, দেশের যে উন্নয়ন হয় তার ৮০ ভাগ খরচ হয় টেন্ডার ও প্রকিউরমেন্টের মাধ্যমে। সেখানে তো দুর্নীতির উৎস। সেই প্রকিউরমেন্ট ডিজিটালাইজ করেছি।
ই-টেন্ডারে জি কে শামীম সরকারের বেশিরভাগ কাজ পেয়েছে, এমন প্রশ্নে রাজ্জাক বলেন, লাভ হল কী? জাহাঙ্গীরনগর ইউনির্ভাসিটির কাজ ই-টেন্ডারিংয়ে হয়েছিল। যারা লোয়েস্ট হয়েছে তাদেরকে বাদ দিয়েৃ সবকিছু তো বলা সম্ভব না। এ কারণেই জাহাঙ্গীরনগরে সফল হয়নি। শামীমের কথা বলছেন, সিস্টেমগুলো শুরু হয়েছে, একটু হয়তো সময় লাগবে, ইনশাআল্লাহ সিস্টেম এরকম একটা জিনিস। আমাদের মাইন্ডসেটটাও চেইঞ্জ করতে হবে। সিস্টেমগুলো সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করবে।
এফএন/এমআর