পণ্য খালাসে বীমা পলিসি ইস্যুতে সিএন্ডএফ এজেন্টদের অনীহা

প্রথম পাতা » জাতীয় » পণ্য খালাসে বীমা পলিসি ইস্যুতে সিএন্ডএফ এজেন্টদের অনীহা
রবিবার ● ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯


পণ্য খালাসে বীমা পলিসি ইস্যুতে সিএন্ডএফ এজেন্টদের অনীহা

ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥


বাধ্যতামূলক হলেও আমদানি পণ্যের বিপরীতে বীমা পলিসি ইস্যুর ক্ষেত্রে অনীহা দেখায় সিএন্ডএফ এজেন্টরা। বরং তারা পলিসি ইস্যু না করে শুধু কাভার নোট দেখিয়েই পণ্য খালাস করা হয়। এমন অবস্থায়  বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) ও বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ) এনবিআরের সহযোগিতা চেয়েছে। ওই প্রেক্ষিতে আমদানি পণ্যের বীমা পলিসি করার ক্ষেত্রে কঠোর হচ্ছে এনবিআর। ওই বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) একটি নির্দেশনা জারি করেছে। এখন থেকে বীমা পলিসি ছাড়া কোনো পণ্যই খালাস করতে পারবে না সিএন্ডএফ এজেন্টরা। আইডিআরএ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সম্প্রতি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) ও বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ) এনবিআরকে চিঠি দেয়। তাতে বলা হয়, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা বীমা পলিসি ইস্যু করছে না। শুধু কাভার নোট দিয়েই পণ্য খালাস করে নিচ্ছে। বাধ্যতামূলক হলেও বীমা পলিসি করা হচ্ছে না। আর বীমা পলিসি না করার কারণে সরকারও এ থেকে নির্ধারিত রাজস্ববঞ্চিত হচ্ছে।
সূত্র জানায়, এলসি খোলার সময় বীমা কোম্পানির একটি নির্ধারিত ফরমে আমদানি করা পণ্যের সব তথ্য প্রদান করতে হয়, যা বীমা কোম্পানিগুলো সরবরাহ করে থাকে। এটি কাভার নোট হিসেবে পরিচিত। পরবর্তী সময়ে এই কাভার নোট দিয়েই বীমা করার কথা। কিন্তু সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা বীমা কম্পানি থেকে কাভার নোটটি নিলেও বীমা করে না। বরং পণ্য খালাসের সময় কাভার নোট দেখিয়েই পণ্যগুলো খালাস করে নেয়। এমন অবস্থায় নন-লাইফ সাধারণ বীমা খাতের রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধ করতে আইডিআরএ এবং বিআইএ এনবিআরের সহযোগিতা চায়। তাদের চিঠিতে বলা হয়, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা পলিসি ইস্যু না করে কভার নোট দিয়ে পণ্য খালাস করছে। পাশাপাশি বীমা কোম্পানিগুলো পলিসি ইস্যু না করে এজেন্টদের নিয়মবহির্ভূতভাবে সহযোগিতা করে আসছে। ফলে নন-লাইফ বীমা কম্পানিগুলো প্রিমিয়াম কম দেখিয়ে ভ্যাট ফাঁকি দিচ্ছে। এ অবস্থায় পলিসি ইস্যুর পরই যেন পণ্য খালাসের নির্দেশ প্রদান করা হয় সে জন্য এনবিআর চেয়ারম্যানের সহযোগিতা চাওয়া হয়। ওই পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআর বন্দরগুলোতে গত ১৫ সেপ্টেম্বর একটি নির্দেশনা প্রদান করেছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বীমা পলিসি ছাড়া কাভার নোটের বিপরীতে কেউ যাতে পণ্য খালাস না করতে পারে, বিষয়টিতে যথাযথভাবে নজরদারি করতে হবে।
সূত্র আরো জানায়, আইডিআরএর ৬৫ নম্বর সার্কুলারটিতে নন-লাইফ বীমা কম্পানিগুলোর বীমা পলিসির স্ট্যাম্প শুল্ক আদায়ের বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। তাতে বলা হয়েছে, বীমা পলিসির স্ট্যাম্প শুল্ক খাতে সরকারি রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করার জন্য ‘বীমা পলিসির ওপর প্রদেয় স্ট্যাম্প শুল্ক পরিশোধ বিধিমালা ২০০২’ ও অন্যান্য বিধি-বিধান পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্ট্যাম্প শুল্ক পরিশোধ বিধিমালা ৩(২) অনুযায়ী পরিশোধিত চালানে বর্ণিত তথ্য যথা—বীমা গ্রাহকের নাম-ঠিকানাসহ বীমা পলিসি নম্বর স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে। যেকোনো বীমা পলিসিতে ২০ হাজার টাকার ওপর বীমা স্ট্যাম্প প্রযোজ্য হলে তা অন্য বীমা পলিসির চালানের সঙ্গে একত্রিত না করে পৃথক চালানের মাধ্যমে প্রদান করতে হবে। কিন্তু বীমা কোম্পানিগুলো ১৫ শতাংশ কমিশনের জায়গায় ৭০-৮০ শতাংশ কমিশন প্রদান করতো। আইডিআরএ চাইছে বীমা কম্পানিগুলো যেন কোনোভাবেই বাড়তি কমিশন দিতে না পারে। একই সঙ্গে পলিসি ছাড়া যেন কোনো পণ্য খালাস না হয়। এ কারণে বিষয়টির নজরদারিতে এনবিআরকে নৌ, স্থল ও বিমানবন্দরগুলোতে নির্দেশনা প্রদানের অনুরোধ করা হয়েছে।
এদিকে এ বিষয়ে আইডিআরএর চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান পাটোয়ারী জানান, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা এখানে চালাকির আশ্রয় নিচ্ছে। পণ্য আমদানি করার সময় বীমা পলিসি বাধ্যতামূলক। কিন্তু সেখানে শুধু কাভার নোট কেনে, কিন্তু পলিসি করে না। এ বিষয়ে এনবিআরের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। এনবিআর যদি পণ্য খালাসের আগে পলিসি চেক করে তাহলে আর এই ফাঁকি দেয়া সম্ভব হবে না।

এফএন/এমআর

বাংলাদেশ সময়: ১৯:৪৯:০৪ ● ৩৮৮ বার পঠিত




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ