ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
ক্যাসিনো বন্ধে র্যাবের অভিযানে যুবলীগ নেতাদের সম্পৃক্ততাকে ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতির প্রমাণ হিসেবে দেখালেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত নেতাকর্মীরা এখন দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। তারই কিছু প্রমাণ গত কয়েকদিনের অভিযানে দেখা গেছে। এমন না যে তাঁরা (সরকারের) কেউ জড়িত নেই, সবাই জড়িত আছে। এখন তো কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসছে। সুতরাং কারো নিস্তার নেই। জনগণের রোষের কাছ থেকে কেউ নিস্তার পাবে না।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে ছাত্রদলের নবনির্বাচিত সভাপতি-সম্পাদককে নিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মির্জা ফখরুল গণমাধ্যমের কাছে এসব কথা বলেন। ফখরুল বলেন, ঢাকা মহানগর থেকে শুরু করে যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পর্যন্ত সবখানেই তারা আজকে যে ভয়াবহ আকারে দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়েছে, এটা দেশের জন্য, জনগণের জন্য অত্যন্ত ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। জুয়ার আখড়া বন্ধে বিগত কয়েকদিনে র্যাবের অভিযানে যুবলীগের বিভিন্ন নেতার সম্পৃক্ততার বিষয়টি উঠে এসেছে। তার আগে চাঁদা দাবির অভিযোগ ওঠায় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে পদচ্যুত করা হয়। জুয়ার আখড়ায় সম্পৃক্তদের আগে বিএনপির সহযোগী সংগঠন যুবদলে যুক্ত থাকার বিষয়টিও উঠে এসেছে, যা বলছেন আওয়ামী লীগের নেতারাও।
এনিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই ধরনের কথাবার্তা বলে তো লাভ নেই। দেশের মানুষ বোঝে। এটা তারা এড়িয়ে যেতে চায়। আপনারা দেখছেন, ধর্মের কল বাতাসে নড়তে শুরু করেছে। ক্যাসিনো ব্যবসা বিএনপির আমলেই শুরু হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ফখরুল বলেন, উনাকে জিজ্ঞাস করেন তো এটা (ক্যাসিনো) পত্র-পত্রিকায় কখন সামনে এসেছে? বিএনপির আমলে তো কখনও মিডিয়াতে আসেনি। আজকে পত্র-পত্রিকা, টেলিভিশনে যেভাবে এসেছে, এতে প্রমাণিত হয়ে গেছে যে, আওয়ামী লীগ সরকার শুধু দুর্নীতি নয়, তারা বাংলাদেশের যে রাজনৈতিক কাঠমো তা ভেঙে ফেলছে, সামাজিক কাঠামো তা ভেঙে ফেলছে এবং এদেশকে সত্যিকার অর্থে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। সকালে ছাত্রদলের নতুন নেতাদের নিয়ে শেরে বাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল দিতে যান ফখরুল। সেখানেই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ছাত্রদলের কাউন্সিল আয়োজন করা হয় বুধবার। তাতে ফজলুর রহমান খোকন সভাপতি এবং ইকবাল হোসেন শ্যামল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ছাত্রদলের কাউন্সিলের অর্জন কী- প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের তত্ত্বাবধানে অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে ছাত্রদলের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে এবং আমাদের তরুণ দুজন মেধাবী ছাত্রনেতা নির্বাচিত হয়েছেন। ছাত্রদলের এই নেতৃত্ব দেশনেত্রী মুক্তির আন্দোলন গণতন্ত্র মুক্তি আন্দোলনের নেতৃত্ব নিঃসন্দেহে সবচেয়ে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আমরা সবাই বিশ্বাস করি। বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের সহ দেশের মানুষের তাদের প্রতি দোয়া আছে এবং তাদের প্রতি সবার সেই বিশ্বাস আছে যে তাঁরাই আন্দোলনের সফল হবেন। নতুন নেতৃত্ব দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তির জন্য দেশব্যাপী দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে। ছাত্রদল তাঁর (খালেদা জিয়ার) মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা ঘরে ফিরে যাবে না এই ছিল আজকে তাদের শপথ, যোগ করেন মির্জা ফখরুল।
এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, ছাত্রদলের সাবেক নেতা আবুল খায়ের বাবলু, আসাদুজ্জামান রিপন, ফজুলুর রহমান মিলন, খায়রুল কবির খোকন, শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আজিজুল বারী হেলাল, সাইফুল আলম নিরব, শফিউল বারী বাবু, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মোরতাজুল করীম বাদরু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, আমিরুল ইসলাম খান আলীম, শহিদুল ইসলাম বাবুল, আবদুল আউয়াল খান, হাবিবুর রশীদ হাবিব, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান, ইয়াসীন আলী।
এফএন/এমআর