ঢাকা সাগরকন্যা অফিস॥
স্বাধীনতা বিরোধীরা যাতে কোনোভাবেই নদীরক্ষা আন্দোলনে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সামনে বিশ্ব নদী দিবসকে সামনে রেখে দেশের ৭০টি নদী, পরিবেশ ও সামাজিক সংগঠনের অংশগ্রহণে ‘নদীর জন্য পদযাত্রা’ শীর্ষক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
জাতীয় নদীরক্ষা কমিশন ও নদী দিবস উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ এই পদযাত্রার আয়োজন করে। খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকার নদীরক্ষায় অত্যন্ত আন্তরিক। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আপনাদের মনে রাখতে হবে, আমরা যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছি, এই চ্যালেঞ্জটা যাতে মুখ থুবড়ে না পরে। এই চ্যালেঞ্জের মধ্যে রাজনীতি ঢুকে যেতে পারে। যখন স্বাধীনতাবিরোধী প্রতিক্রিয়াশীলরা রাজনীতির মাঠ থেকে বিতাড়িত হয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার পথে, তখন এই প্রতিক্রিয়াশীলরা কিন্তু বসে থাকবেনা। তারা বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের মধ্যে ঢুকে যেতে পারে। পরবর্তীতে তারা সোচ্চার হয়ে আমাদের আন্দোলনগুলোকে নষ্ট করে দিতে পারে। কাজেই স্বাধীনতাবিরোধী প্রতিক্রিয়াশীলরা এই নদীরক্ষা আন্দোলনে যাতে কোনোভাবেই অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সেদিকে আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, তাদের একমাত্র দায়িত্ব বাংলাদেশকে ব্যর্থ করে দেওয়া। স্বাধীনতাবিরোধীদের একমাত্র কাজ হচ্ছে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেওয়া। নদীও এর বাইরে নয়। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর থেকে ধারাবাহিকভাবে আমরা তাই দেখেছি। তাই আজকে এত বড় বোঝা এই সরকারের ওপর এসে চেপেছে। কিন্তু আমরা এটাকে বোঝা মনে করছি না। এই চ্যালেঞ্জটাকে আমরা গ্রহণ করেছি। ইতোমধ্যে আপনারা দেখেছেন ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় আমরা আমাদের সক্ষমতা অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, কেই যাতে আইনগত পদক্ষেপ নিয়ে আমাদের আন্দোলন নষ্ট করতে রা পারে। আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি যেন আইনানুগভাবে কোর্টে গিয়ে কেউ আমাদেরকে ভুল প্রমাণিত করতে না পারে। সেদিকেও আমরা দৃষ্টি রাখছি। কাজেই এই কাজটি অতি সহজ নয়। তবে কঠিন হলেও আমরা এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেছি। তাই আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, সরকার যখন নিজেই একটি আন্দোলনের সঙ্গে থাকে, রাষ্ট্র যখন একটি আন্দোলনের দায়িত্ব নেয়, তখন আমি মনে করি সেটা কখনো ব্যর্থ হতে পারে না। আমরা এটার সঙ্গে আছি। জনগণ সবসময় আমাদের সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। গণমাধ্যম ভ্যানগার্ড এর ভূমিকা পালন করছে। তাই এই আন্দোলন সফল হবেই, যোগ করেন তিনি।
বিশিষ্ট লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, নদীরক্ষায় জনগণের সঙ্গে সরকারের সম্মিলিত সংগ্রাম তাৎপর্যপূর্ণ। সরকার ও জনগণের উদ্যোগ ছাড়া নদী দখলমুক্ত ও রক্ষা করা অসম্ভব। জাতীয় নদীরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, দেশের সব নদী আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ে দেশের নদী রক্ষা করা সম্ভব। আপনাদের দাবিগুলো নিয়ে সরকার কাজ করছে। আমরা আশা করছি, যেসব সমস্য আছে, আগামি তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে সেগুলো শেষ করা সম্ভব।
ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ, নদী দিবস উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব ও রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন, বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনের সদস্য সচিব মিহির বিশ্বাস প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন রিভারাইন পিপলের পরিচালক মোহাম্মদ এজাজ।
এফএন/এমআর